আমেরিকার ৪০ লাখ অবৈধ অভিবাসীর ভাগ্য কোন দিকে যাচ্ছে ?
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০১৬, ৫:৫৫ অপরাহ্ণ
৪০ লাখ অভিবাসীর দেশে ফেরত যাওয়া ঠেকানোর জন্য হোয়াইট হাউজের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, অভিবাসন সংক্রান্ত মামলার আরেকবার শুনানীর জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছে ওবামা প্রশাসন। নিম্ন আদালতের রায়ের পর গত ২৩ জুন আমেরিকার উচ্চ আদালত ইস্যুটিকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে যেখান থেকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো ঠেকানোর আর কোন উপায় থাকে না। তার উপর আবার গত ফেব্রুয়ারিতে বিচারক এন্টোনিন স্কেলিয়ার মৃত্যুর পর বিচারকেরও সঙ্কট আছে। একটি আবেদনের মাধ্যমে আমেরিকার বিচার বিভাগ মামলাটির দিকে আরেকবার নজর দেয়ার সুপারিশ করেছে। কিন্তু কবে এটা হবে তা নিশ্চিত নয়। কারণ, রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত আমেরিকার সিনেট ওমাবার মনোনিত আপিল বিভাগের বিচারক মেরিক গারল্যান্ডের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
আবার কোন একটি মামলার পুনরায় শুনানী করা উচ্চ আদালতের ক্ষেত্রে বিরল ঘটনা। তবে দায়িত্বরত সলিসিটর জেনারেল আয়ান জার্সেনগর্ণ বলেছেন, অভিবাসী সংক্রান্ত মামলাটি নিয়মিত ঘটনা নয়। কারণ, এই পরিকল্পনা বন্ধ হয়ে গেলে আদালত ভবিষ্যতে এর সমাধান করার জন্য নতুন আরেকটি মামলা নিতে পারবে না। তিনি বলেছেন, সুনির্দিষ্ট একটা রুলিং এর মাধ্যমে উচ্চ আদালত এই শুনানী আবার করতে পারে। এমন অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট যদি অভিবাসীদের ইস্যুটিকে পুনর্বিবেচনা করে, তবুও সেটা জানুয়ারির আগে নয়। ততদিনে হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাবেন ওবামা।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে অভিবাসীদের নিয়ে তার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। কিন্তু খুব দ্রুত আদালতে সেই পরিকল্পনাকে চ্যালেঞ্জ করে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত টেক্সাস এবং আরো ২৫টি স্টেট মন্তব্য করে যে, আমেরিকার সংবিধান ওবামাকে যে ক্ষমতা দিয়েছে তার অপব্যবহার করা হচ্ছে। টেক্সাসের এ্যাটর্নী জেনারেল কেন প্যাক্সটন বলেছেন-
‘আইনগতভাবে আমরা সঠিক অবস্থানে আছি। এই মামলার সবগুলো পর্যায়ে আমরা জিতেছি এবং শেষ পর্যন্ত এই অবস্থান ধরে রাখার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।
২০১৪ সালের নভেম্বরে অভিবাসীদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন তাতে বলা হয়েছিল- ২০১০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রায় ৪০ লাখ অবৈধ অভিবাসী যাদের কোন অপরাধের রেকর্ড নেই, যাদের সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা আইনগতভাবে আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা তাদেরকে একটা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং ওয়ার্ক পারমিট দেয়া হবে। অর্থাৎ এর মাধ্যমে ঐ অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে একটা ঢাল তৈরি হয় বা তাদের স্থায়ীভাবে আমেরিকায় থেকে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু একদিকে ওবামা সরকারের সময় শেষ হয়ে আসছে, অন্যদিকে আদালতেও এর পক্ষে রায় পাওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের সেখানে বসবাসের আইনগত কোন যৌক্তিকতা তৈরি হওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে গেছে।