অটোরিকশা শূণ্য ওসমানীনগর; জনজীবনে চরম ভোগান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুলাই ২০১৬, ১২:৪৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেটের ওসমানীনগরে অটোরিকশা (সিএনজি) চালক ও শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের পর অটোরিকশা বিহিন হয়ে পড়েছে পুরো ওসমানীনগর। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। এদিকে, শেরপুর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট শাহিন বাদি হয়ে বুধবার দিবাগত রাতে অজ্ঞাতনামা দুই শতাধিক চালককে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
অটোরিকশা চালকরা জানান, ওসমানীনগরের অধিকাংশ এলাকার যোগাযোগ মহাসড়ক কেন্দ্রিক হওয়ায় গ্রাম্য রাস্তায় তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না। এছাড়া চলতি বর্ষায় গ্রাম্য রাস্তাগুলো যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়েই অটোরিকশা নিয়ে মহাসড়কে উঠতে হচ্ছে। এ সুযোগে হাইওয়ে পুলিশ মামলার ভয় দেখিয়ে মহাসড়কে উঠা প্রতিটা অটোরিকশা থেকে বিভিন্ন হারে চাঁদা আদায় করে থাকে।
গত ২০জুলাই কাগজপুর এলাকায় শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ অর্ধশতাধিক অটোরিকশা আটকিয়ে চাঁদাবাজী করে। প্রতিদিন এভাবে চাঁদা দিতে থাকলে পরিবার উপোষ থাকবে অটো চালকরা এমন আর্জিতেও হাইওয়ে পুলিশ কর্ণপাত করেনি। এনিয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও কয়েকজন চালকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরবর্তীতে শেরপুর হাইওয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে মারমুখী অবস্থান নেয়। এ সময় চালকরা পালিয়ে গেলে হাইওয়ে পুলিশ অর্ধশতাধিক অটোরিকশা ভাংচুর করে।
তবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওসমানীনগর কাগজপুর এলাকায় ২০জুলাই বিকালে গাড়ীর ফিটনেসসহ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই কাজে দায়িত্ব পালন করেছিলো শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের একটি টহল টিম। এসময় কর্তব্যরত পুলিশ স্থানীয় অটোরিকশা চালকদের আটকিয়ে মহাসড়কে উঠতে নিষেধ প্রদান করে। এতে অটোরিকশা চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে দায়িত্বরত হাইওয়ে পুলিশদের প্রতিরোধ করতে চাইলে চালক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ব্যবহৃত সরকারী গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে শেরপুর হাইওয়ে থানায় কমর্রত পুলিশ সদস্যরা সম্মিলিতভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে চালকদের ধাওয়া করলে চালকরা পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বলেন, ঘটনার দিন আমিও সিএনজি নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। হাইওয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হলে চালকরা পালিয়ে যান। কিন্তু তারপর পুলিশ যা করেছে তা অমানবিক। যদি কেউ পুলিশের গাড়ী ভেঙ্গে থাকে তবে পুলিশ তাকে আটক করতে পারে। কিন্তু পুলিশ অটোরিকশাগুলো ভেঙ্গে তারা আমাদের মুখের ভাত কেড়ে নিয়েছে। সরকার মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়েছে কি! আমি অটোরিকশা ভাড়ায় এনে চালাই। পুলিশ আমার অটোরিকশা ভেঙ্গে ফেলায় আমাকেই তার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। এখন মামলা দিয়ে আবার হয়রানি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মুজিবুর রহমান সুরমা নিউজকে বলেন, মহাসড়কে দায়িত্ব পালনকালে স্থানীয় সিএনজি চালকরা সংঘবদ্ধ ভাবে হামলা চালিয়ে পুলিশকে বহনকারী সরকারী গাড়িটি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে ওসমানীনগর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে। সরকারী নির্দেশনুযায়ী মহাসড়কের এ অংশে যাতে অটোরিকশা (সিএনজি) চলাচল করতে না পারে সে লক্ষ্যে শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।