সিলেটের ‘জঙ্গি তামিম’ র দাদা শান্তি কমিটির সহযোগী ছিলেন !
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুলাই ২০১৬, ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
বিয়ানীবাজারের দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের শফি আহমদ চৌধুরী ও খালেদা শফি চৌধুরীর পুত্র আজকের ‘জঙ্গি তামিম’। দেশব্যাপী নিখোঁজ থাকা তরুণদের যে তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, তাতে সিলেটের বিয়ানীবাজারের তামিম আহমদ চৌধুরী ছাড়াও আরো চারজনের নাম রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তামিমের জন্ম কানাডায় এবং সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। পড়াশোনা করেছেন কানাডার নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তার পিতা শফি আহমদ চৌধুরী একসময় চট্টগ্রামে জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বপরিবারে তিনি পাড়ি জমান কানাডায়। তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার দাদা শান্তি কমিটির সহযোগী ছিলেন।
তামিমের আত্মীয়রা জানান, বিয়ানীবাজার উপজেলার ভারত সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামের বাড়িতে আসার ব্যাপারে সবসময়ই তাদের অনীহা ছিল। শেষ ২০০১ সালে তারা স্বপরিবারে বাংলাদেশে আসলেও গ্রামের বাড়িতে আসেননি। সিলেট নগরীতে বাসা ভাড়া করে প্রায় ৩মাস থাকার পর আবারও ফিরে যান কানাডায়।
র্যাবের প্রকাশ করা তালিকায় ১৮৫ নম্বরে থাকা তামিম আহমদ চৌধুরীর জন্ম তারিখ ২৫ জুলাই ১৯৮৯ সাল। তার পাসপোর্ট নম্বর এএফ-২৮৩৭০৭৬ ইস্যুঃ ০৪/০৮/২০১৩ মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখঃ ০৩/০৮/২০১৬ পুরাতন পাসপোর্ট নং- এল ০৬৩৩৪৭৮ জম্ম নিবন্ধন নং- ১৯৮৬০০৯১২৪১০০১৩৪২। তবে তার নিখোঁজের ব্যাপারে কোন তথ্য নেই, বাংলাদেশের কোন থানায় এ ব্যাপারে কোন জিডিও নেই।
তামিম আহমদ ব্যক্তি জীবনে বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তারা ৩ ভাই ও ১ বোন। গ্রামের বাড়ির কারো সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। মূলত ফেঞ্চুগঞ্জের নানা বাড়ির লোকজনের সাথে তাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গি তামিমের চাচাতো ভাই তাজিম আহমদ চৌধুরী (২৩), প্রতিবেশী জাকারিয়া আহমদ চৌধুরী (২৯), স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এবং এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেশী জাকারিয়া আহমদ চৌধুরী জানান, তামিমদের গ্রামের বাড়ির বসতঘরে প্রাচীন বনেদী পরিবারের ছাপ রয়েছে। তবে গ্রামে তাদের তেমন কোন সহায় সম্পত্তি নেই। জমিজমা যা ছিল, তাও বিক্রি করে দিয়েছেন তামিমের পিতা।
দুবাগ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, তামিমের গ্রামের বাড়ির অনেক সদস্যই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। তার দাদা মৃত আব্দুল মজিদ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির সদস্যদের নানাভাবে সহায়তা করতেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এলাকার লোকজনকে তিনি কৌশলে আপন করে নেন।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জুবের আহমদ বলেন, তামিমের বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর থেকে আমরা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে এ ব্যাপারে কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। তারা স্বপরিবারে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে।