দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা:
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার সুরমা ইউনিয়ন। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সহস্রাধিক হেক্টর সদ্যবোনা রোপা আমন এবং বীজতলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের মানুষ। রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা সদরের সাথে সীমান্তের ৫ ইউনিয়নের প্রধান সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন ও ফাঁটল এবং নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়কগুলো তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে উপজেলার খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, মরাচেলা ও চলতিসহ সবক’টি পাহাড়ি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই। নদীর উভয় তীরে ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সকালে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সুরমা ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর টিলাগাঁও রাবারড্যাম’র বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মহব্বতপুর, বক্তারপুর, গোজাউড়া, খাগুড়া, জিয়াপুর, আলীপুর, বৈঠাখাই, গিরিশ নগর, মিরপুর, মারপশী, বরকত নগর,কাওয়ার গড়,শিমুলতলা, রাজ নগর, টেংরাটিলাসহ ওই ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া মহব্বতপুর বাজারে কোমরপানি থাকায় চরম হুমকিতে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়কের নৈনগাওয়ে দুটি ব্রীজ ও রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে। বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে।
এদিকে রোপা আমন, বীজতলা ও অনেকগুলো মৎস্য খামার তলিয়ে যাওয়ায় আহাজারি করছেন কৃষকরা। পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী নরসিংপুর ইউনিয়নের চেলা, মরাচেলা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।বগুলাবাজার ইউনিয়নের চিলাই, খাসিয়ামারা নদীর পানিও আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সুরমা ইউনিয়নকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত রাবার ড্যাম সড়কসহ সুরমা ইউনিয়নের পানিবন্দি এলাকা এলজিইডি’র জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।