সুরমানিউজে পরিচয় প্রকাশঃ জঙ্গি শাফিকে নিয়ে ওসমানীনগরে তোলপাড়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জুলাই ২০১৬, ৩:৫৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জঙ্গি শাফির গ্রামের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় হওয়ার খবর পেয়ে এলাকাবাসীর মনে আতংক বিরাজ করছে। তাহমিদ রহমান সাফি ওসমানীনগরের দয়ামীর ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের সফিউর রহমানের পুত্র। সফিউর রহমান ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালনসহ তিনি নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বও পালন করেন।
বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা একই গ্রামের মৃত আজিদ উল্যার পুত্র জাহেদুর রহমান (৪০) জানান, তিনি ৫/৬মাস ধরে তিনি বাড়ির দায়িত্বে থাকলেও এ বাড়ির কেউ এরমধ্যে গ্রামে আসেননি। তিনি বিগত কয়েকমাস ধরে সফিউর রহমানের দূর সর্ম্পকের এক ভাতিজার মাধ্যমে এ বাড়িটির দেখাশোনার দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু সচিবসহ তার পরিবারের লোকজনকে চোখে দেখিনি। আজ বাড়িতে পুলিশ আসায় তিনি জঙ্গি শাফির পরিচয় জেনেছেন।
তবে সফিউর রহমানের কোন ভাতিজার মাধ্যমে তিনি বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্ব পেয়েছেন জানতে চাইলে জাহেদুর রহমান আমতা আমতা করে বলেন, তার নাম মনে নেই।
স্থানীয় একাধিক প্রবীণ বলেন, পেশাগত কারনে সাফিউর রহমান ঢাকায় অবস্থান করলেও বছরে দু-একবার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসতেন এবং এলাকার মানুষদের সাথে কুশল বিনিময় করতেন। এলাকার লোকেরাও তাকে খুব সম্মান করে। কিন্তু তার ছেলে শাফি সম্পর্কে কোন ধারণা নেই কারো। বাবার সাথে শাফি কয়েকবার বাড়িতে এলেও এলাকার লোকজনের সাথে মিশতে চায়নি কখনো।
দয়ামীর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এসটিএম ফখর উদ্দিন সুরমানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শাফির বাবা সাফিউর রহমান সাহেবকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে এলাকাবাসী প্রবীণ ব্যক্তিরা জানেন। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করায় এলাকার কেউই সাফিউর রহমানের পরিবারের সাথে পরিচিত নন। ফলে তাঁর ছেলে-মেয়েরা কে কি রকম বা কি করে সে ব্যাপারে আমরা এলাকাবাসী অবগত নই। সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে সাফিউর রহমানের ছেলের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার খবর জানতে পেরে আমরা সবাই হতবাক।
দয়ামীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মশাহীদ বলেন, সাবেক সচিব ও নির্বাচন কমিশনার সাফিউর রহমান একজন খাঁটি মানুষ ছিলেন। তবে তাঁর ছেলে জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে এলাকার সবর্ত্র আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, সাফিউর রহমান চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে আর গ্রামের বাড়িতে আসেননি। বছর দেড়েক আগে তিনি মারা গেছেন এবং বুদ্ধিজীবী কবরস্থান তাঁর দাফন হয়েছে বলে জেনেছি।
শাফিদের বাড়ির খোঁজ নিতে আসা ওসমানীনগর থানা এসআই রমা প্রসাদ চক্রবর্তী জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে ঠিকানা প্রকাশ হওয়ার পর প্রশাসন থেকে নিয়মিত এ বাড়ির প্রতি নজর রাখা হচ্ছে।
ওসমানীনগর থানার ওসি আবদুল আউওয়াল চৌধুরী বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আইএসের নামে হুমকিদাতা শাফির পৈতৃক বাড়িটি নজরদারি করছে পুলিশ। এছাড়া গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে কাদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত আলী জানান, জঙ্গি হামলা চালানোর হুমকিদাতা তিন জনের একজনের বাড়ি এ উপজেলায় জানতে পেরে আমি উর্ধ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। এবং শাফির পৈত্রিক বাড়িটির দিকে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়দের আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই গুলশানে রেস্টুরেন্টে হামলার পর আইএসের নাম এই ভিডিওবার্তা প্রকাশ করা হয়। ভিডিওবার্তায় শাফিসহ তিনজনকে গুলশানের হামলা পর বাংলাদেশে আরো হামলার হুমকি দিতে দেখা যায়।