মানুষ মানুষের জন্য: ওসমানীনগরের এক তরুণের প্রশংসনীয় উদ্যোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩৬:১৪,অপরাহ্ন ১৭ জুলাই ২০১৬
নিজস্ব প্রতিবেদক:
২সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে ছিলো রিকশাচালক উছমান আহমদ (জামাল)র সুখের সংসার। সারাদিন রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে যা আয় হতো তা দিয়ে কোনমতো চলতো তাদের সংসার। কিন্তু সে সুখ তাদের বেশীদিন টিকলো না। হঠাৎ করেই উছমান আহমদ (জামাল)র মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটে। কথায় কথায় রাগ ও ধমকে পরিবারের সবাইকে তটস্থ রাখতেন। প্রথমে তা সীমার মধ্যে থাকলেও এক সময় তা সীমা অতিক্রম করে। ডাক্তার-কবরেজের চিকিৎসা করিয়ে কোন ফল আসেনি তাতে।
ওসমানীনগরের উমরপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের আনোয়ার মিয়া বাড়িতে আশ্রিত থাকা উছমান আহমদ (জামাল) একপর্যায়ে চুড়ান্ত অসুস্থ অবস্থায় বাড়ী ঘর ছেড়ে রাস্তায় রাস্তায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরতে শুরু করেন।
এই অবস্থায় গত ২০১৫সালে ২ শে জানুয়ারী রংবরং রাস্তায় বালাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়ার গাড়িতে দা দিয়ে কোপ মারলে স্থানীয়রা উছমান আহমদ (জামাল)কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। থানা পুলিশ উন্মাদ ও ভরঘুরে উছমান আহমদ (জামাল)কে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থার আবেদন জানিয়ে সিলেট জেল হাজতে প্রেরণ করেন। প্রায় এক বছর চিকিৎসা শেষে জামাল মিয়া সুস্থ হয়ে উঠলেও কেউ তাকে দেখতে আসেনি বা খোঁজ করেনি। বাড়িতে যোগাযোগ করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি অবগত হয়ে মোল্লাপাড়া গ্রামের সমাজকর্মী আব্দুর রহিম উছমান আহমদ (জামাল)র জামিনের জন্য এগিয়ে আসেন। তার ঐকান্তিক চেষ্টায় গত ১৪ জুলাই সিলেট জজকোর্টের এডভোকেট মোঃ ওয়ারিছ উদ্দিন চৌধুরীর সহযোগিতায় উছমান আহমদ (জামাল) জামিন লাভ করেন।
এ ব্যাপারে আব্দুর রহিম বলেন, উছমান আহমদ (জামাল)র সুন্দর একটি সাজানো গোছানো সংসার ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে তার মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটায় ঠাঁই হয়েছিলো নিরাপদ হেফাজতে। পরবর্তীতে তিনি আবার সুস্থ হয়েছেন জেনে আমি এডভোকেট মোঃ ওয়ারিছ উদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করি। তিনি বিষয়টি শোনে টাকা পয়সা ছাড়াই আমাকে আইনী সহায়তা প্রদান করেন। এ ছাড়া মোঃ হাকিম রাজা নামের আরো একজনও আমাকে সহযোগিতা করেছেন উছমান আহমদ (জামাল)র জামিন নিতে।