মেস ভাড়া নিতে লাগবে পুলিশের অনুমতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০১৬, ৬:৩২ অপরাহ্ণ
সুরমা ডেস্কঃ
জঙ্গিরা বিভিন্ন মিথ্যা পরিচয়ে মেস ভাড়া করে থেকে নাশকতা চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হবার পর এবার মেস ভাড়ার ব্যাপারে নতুন শর্ত আরোপ করেছে ঝিনাইদহ পুলিশ। এখন থেকে মেস ভাড়া দিতে হলে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং কারা মেসে থাকবে তাও ঠিক করে দেবে পুলিশ।
শনিবার সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলতাফ হোসেন।
এসপি আলতাফ দাবি করেন, তাঁর জেলায় জঙ্গিদের কোনো আস্তানা নেই। এমনকি জেলা শহরের সোনালীপাড়ার (খোন্দকার পাড়া) অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট কাওছার আলীর বাড়িতে নিহত জঙ্গি নিবরাস ইসলাম ও তার কথিত খালাতো ভাই আবির রহমান ছিল এমন কোনো তথ্যও নেই তাঁদের কাছে।
এ সময় এসপি ঝিনাইদহের কাওছার আলীর মেস থেকে ঢাকার গুলশানে হামলা চালানোর বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, যেদিন ঢাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে সে দিনই ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালীচরনপুর ইউনিয়নের মধুপুর-কাষ্টসাগরা গ্রামের রাধা-মদন-গোপাল মঠের সেবায়েত শ্যামল নন্দ দাস বাবাজি (৬২) খুন হন। একই দিনে নিব্রাস ইসলাম (গুলশানে রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় নিহত) দুই ঘটনায় অংশ নিয়েছে এমন খবর বিভ্রান্তিকর।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিরা এখানে অবস্থান করেছে এমন কোনো তথ্য প্রমাণ আজো পাননি তাঁরা। তবে বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গণমাধ্যমে প্রচার করা খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার জন্য প্রমাণহীন তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।’
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলায় নিহত জঙ্গি আবির রহমান ঝিনাইদহে ছিল না এমন দাবি করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘বিষয়টি সাজানো।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, ‘পাশেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়- যে কারণে ছাত্রশিবিরের আধিপত্য এখানে বেশি। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে ডাটাব্যাজ তৈরি করা হচ্ছে। এখন থেকে মেস ভাড়া দিতে হলে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। কারা মেসে থাকবে তাও ঠিক করে দেবে পুলিশ।’
জেলা শহরের আলোচিত সোনালীপাড়ায় (খোন্দকারপাড়া) অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট কাওছার আলীসহ পাঁচজন এখন কোথায় আছেন এমন প্রশ্ন করা হলে আলতাফ হোসেন বলেন, বিষয়টি জানা নেই তাঁর। বাড়িটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের খবরও জানেন না বলেও দাবি করেন ঝিনাইদহ পুলিশের সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তা।
এদিকে জেলা শহরের আলোচিত সোনালীপাড়ায় (খোন্দকারপাড়া) আজো ছিল আতঙ্ক। শোলাকিয়া হামলায় জড়িত নিহত জঙ্গি আবির রহমান সেখানে ছিল একটি জাতীয় দৈনিকে এমন খবর প্রকাশিত হলে নতুন করে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী নিব্রাস ইসলাম ওরফে সাইদ মেসটিতে ছিল এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করলেও আবিরের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ।
এই প্রসঙ্গে তুললে এসপি আলতাফ হোসেন বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এ জেলায় এক সময় চরমপন্থীদের অভয়ারণ্য ছিল। এখন নেই। ২০১৩-১৪ সালে জামায়াত-শিবির মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
এখন পরিবেশ ভালো দাবি করে এসপি বলেন, চলতি বছরের এ পর্যন্ত জেলায় চারটি আলোচিত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সব ঘটনা আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। এসব হত্যার সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রশিবিরের নেতারা জড়িত।