বেবিট্যাক্সি চালক থেকে বনদস্যু !
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০১৬, ১০:১০ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
মজনু গাজীর বাড়ি খুলনার কয়রায়। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। বেবিট্যাক্সি চালিয়ে এক সময় সংসার চালাতেন। অভাবের সংসারে টানাপড়েন লেগেই থাকত। অভাব দূর করতে এক যুগ আগে সুন্দরবনে যাওয়া-আসা শুরু করেন। সে সময় থেকেই দস্যুদের সঙ্গে তার সখ্যতা। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন বনদস্যু ‘মজুন বাহিনী’র প্রধান।
মংলার বিএফডিসি জেটিতে শুক্রবার বনদস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া মজনুর ছোট ভাই মজিদ গাজী এভাবেই ভাইয়ের দস্যু হয়ে ওঠার কাহিনী শোনান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মজনুর বাবা আমীর আলী গাজী, বোন ইরানী বেগম, স্ত্রী রেশমা, ছেলে চয়ন ও মেয়ে সেতু ওরফে শিলা এবং এক ভাগ্নি। শুক্রবার সুন্দরবনের দুটি বনসদ্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর একটি হচ্ছে মজনু বাহিনী।
মজিদ গাজী বলেন, মজনু ভাই ভালো বেবিট্যাক্সি চালাতেন। এক সময় তিনি সুন্দরবনে যাওয়া শুরু করেন এবং সেখানে থাকতেও শুরু করেন। ধীরে ধীরে মজনুর দস্যু হয়ে ওঠার খবর আসতে থাকে। এ অবস্থায় তারা কয়রা ছেড়ে খুলনায় চলে আসেন।
.মজিদ আরও বলেন, আত্মসমর্পণ করে মজনুর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় তারা খুবই আনন্দিত। গত সপ্তাহে মজনু বাহিনী আত্মসমর্পণের পর র্যাবের হেফাজতে ছিল এ বাহিনী সদস্যরা। এরপর থেকেই তারা উদ্বিগ্ন ছিল। শুক্রবার আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মজনুকে দেখার পর তাদের উদ্বেগ কমেছে।
মজনুর মেয়ে সেতু বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মানবিক বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর ছেলে চয়ন একই কলেজে ইতিহাসে অনার্স পড়ছেন। মজনুর বোন ইরানী বেগম বলেন, ‘সংসারে অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছিল। এ অবস্থায় সহজেই আয় রোজগারের জন্য মজনু সুন্দরবনে যায়। তখন থেকেই ভাই আমার ধীরে ধীরে দস্যু হয়ে ওঠে। আমরা বুঝিয়েও তাকে ফেরাতে পারি নাই। এখন সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারার সুযোগ পাওয়ায় আমরা আনন্দিত।’
মজনুর বাবা বলেন, তিনি দিনমজুরি করেন। কখনও রাজমিস্ত্রির সহযোগী, কখনও ঠেলা গাড়ি ঢেলার কাজ করেছেন। মজনু বেবিট্যাক্সি ছেড়ে সুন্দরবনে যাওয়ার পর দস্যু হওয়ার খবরে তিনি ও তার স্ত্রী কষ্ট পান।