ওসমানীনগরে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত পাঁচ শতাধিক শিক্ষক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০১৬, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ: বালাগঞ্জ উপজেলার ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫শতাধিক শিক্ষক পরিবারে ঈদ আনন্দ নেই। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে কাংখিত বেতন বোনাস পাননি ওসমানীনগরের শিক্ষকরা।
পবিত্র ঈদুর ফিতর উদযাপনে বেতন বোনাস না পাওয়াতে পরিবার পরিজনদের নিয়ে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা।
মুসলমানদের সবচেয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। কিন্তু কিছু কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার কারণে বেতন বোনাস না পাওয়াতে কেনাকাটা করতে পারছেন না তারা। নিজেদের টা না হয় বাদই দিলেন কিন্তু সন্তানদের কি বলে সান্তনা দেবেন! এমনকি সংসারের দৈনন্দিন খরচ চালাতে ধারদেনা করতে হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ও সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে ওসমানীনগর উপজেলার ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৫শ’ শিক্ষক ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষা অফিস থেকে সময় মতো ঈদের বেতন বোনাসের বিল সোনালী ব্যাংকে না পাঠানোর কারণে চলতি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন চলতি মাসের ২৬ তারিখের মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষকদের বেতন বোনাসের বিল সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ব্যাংকে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের গাফিলতির কারণে ট্রেজারি থেকে ব্যাংকে বিল বিলম্বে যায়। যার ফলে সোনালী ব্যাংক বালাগঞ্জ সদর শাখা থেকে ওসমানীনগরের পুবালী ব্যাংক গোয়ালাবাজার ও তাজপুর শাখা চলতি মাসের ২৯ তারিখ টাকা কালেকশনের প্রক্রিয়া শুরু করে। ৩০ জুন দুপুর আড়াইটার পর পুবালী ব্যাংক এর এই দুই শাখায় ওসমানীনগরের শিক্ষকদের হিসাব নাম্বারে ঈদের বেতন বোনাস জমা হয়। রমজান মাসে আড়াইটায় ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং ঈদের ছুটির শেষ কার্যদিবস থাকায় কোন শিক্ষকরাই চলতি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের টাকা ব্যাংক থেকে তুলতে পারে নি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে মুসলমানদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুর ফিতর উদযাপনে সারা মাসের কষ্টার্জিত ও কাংখিত বেতন বোনাস না পাওয়ায় পরিবার পরিজনদের নিয়ে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে ওসমানীনগরের শিক্ষকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেছেন বেতন বোনাস না পাওয়ায় ধার দেনা করে ঈদ করতে হবে তাদের।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন বর্তমান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বালাগঞ্জে যোগদান করার পর থেকে প্রতি মাসেই শিক্ষকদের বেতনের বিল সময় মত ট্রেজারি অফিসে জমা না করায় শিক্ষকরা নিয়ম মতো বেতন তুলতে পারেন নি।
ওসমানীনগর উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফুল মিয়া ও থানাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজাদ মিয়া বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির কারণে আমরা শিক্ষকরা বেতন বোনাস না পাওয়ায় এতো বড় একটি ঈদ উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলাম।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা প্রদীপ বড়–য়া বলেন, শিক্ষকদের বেতনের বিল আমার অফিসে ২৮ জুন শিক্ষা অফিস থেকে পাঠালে স্বাক্ষর করে ব্যাংকে পাঠাই।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ২৬ জুনের আগেই আমার অফিস থেকে শিক্ষকদের বিল পাঠাই ব্যাংকের গাফিলতির কারণে হয়তো শিক্ষকরা সময়মতো বেতন-বোনাস পাননি।