ঢাকায় ইংরেজি মাধ্যমের নামি স্কুল স্কলাসটিকা কিংবা মালয়েশিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে তাদের লেখাপড়া। মাদ্রাসা থেকে পড়ে আসা ‘উগ্রপন্থি’ তারা নন। বিত্তে, বিচরণে তাদের সবার যোগাযোগ সমাজের উঁচু স্তরে। অভিজাত এলাকা গুলশানের যে ক্যাফেতে রোমহর্ষক হামলা হয়েছে, সেই হলি আর্টিজান বেকারিতে ওই শ্রেণিরই যাতায়াত বেশি। যে পাঁচ জঙ্গির ছবি আইএস প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে চারজনের পরিচয় ফেইসবুকে তুলে ধরেছেন স্কুল-কলেজ সূত্রে পরিচিতজনরা।
তাদের একজন নিব্রাস ইসলাম নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। সাবেক সহপাঠীরা শনাক্ত করে তার ছবি ও পরিচয় সামনে এনেছে।
নিব্রাস ইসলামের এই ছবি ও সাইটের দেওয়া ছবি পাশাপাশি দিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে ফেইসবুকে। বলা হচ্ছে, তিনি অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক মোনাশ ইউনিভার্সিটির মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সার্ভিসেসের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ধনী পরিবারের সন্তান নিব্রাস ইসলাম পড়েছেন ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুলে। খরচের কারণে যেখানে পড়ার সুযোগ সব শ্রেণির হয় না। মোনাশে ভালো না লাগায় দেশে ফিরে নিব্রাস ভর্তি হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার নিব্রাসের আগ্রহ ছিল ফুটবলে। ওয়ারি আর উত্তরায় বাড়ি আছে তার ব্যবসায়ী বাবার। নিব্রাসের তিন চাচার মধ্যে একজন সরকারের উপ সচিব, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, আরেকজন বিজ্ঞানী।
সেই মোনাশ ইউনিভার্সিটিরই আরেক ছাত্রকে শনাক্ত করা হচ্ছে আন্দালিব আহমেদ হিসেবে। ফেইসবুকে তার আগের ও সাইটের দেওয়া ছবি পাশাপাশি দিয়ে মিল ধরিয়ে দিয়েছেন একজন। মোনাশে যাওয়ার আগে আন্দালিব পড়েছেন ঢাকার নামকরা ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল সানিডেলে।
রাইয়ান মিনহাজ নামে এক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের নামও ফেইসবুকে আসছে পাঁচ জঙ্গির একজনের ছবির পাশে। তিনিও এক সময় মালয়েশিয়ায় মোনাশে পড়েছেন। ফেইসবুকে নিব্রাসের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। ঢাকার প্লে পেন আর আগা খান স্কুলের মতো পশ্চিমা ঘরানার ব্যয়বহুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ে আসা মিনহাজ সত্যিই ওই পাঁচজনের একজন কি না, তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
আরও দুজনের পরিচয় ফেইসবুকে প্রকাশ করেছেন পরিচিতজনরা, যাদের দুজনেই স্কলাসটিকা স্কুলের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র। মীর সামেহ মুবাশ্বের ও রোহান ইমতিয়াজ নামের এই দুই তরুণ বেশ কিছুদিন ধরে নিখোঁজ বলে পরিবারের ভাষ্য।