আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে সাত বছরে মারা গেছে ১০১ জন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০১৬, ৫:৪২ অপরাহ্ণ
সুরমা ডেস্কঃ
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের মে পর্যন্ত সাত বছরে নির্যাতনে ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। একইসঙ্গে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং নির্যাতন বন্ধে অবিলম্বে একটি স্বাধীন ও পৃথক তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান গঠনের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে এখন একটি সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু থাকা এবং নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩-এর বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের ঘটনাগুলো ঘটছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা একে আরও প্রকট করে তুলেছে। এসময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ এখন হত্যা, খুন, অপহরণ এবং নির্যাতনের চারণভূমি। খুন এখন সরকারি-বেসরকারি উৎসব। যদি সন্ত্রাসীরা একটি খুন করে, তবে সরকার করে ১০টা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির উদ্দেশে বলেন, যদি ক্ষমতায় আসতে চান, জনগণের ভালোবাসা পেতে চান, পরিষ্কারভাবে কথা বলতে হবে। অপারেশন ক্লিনহার্ট করে আপনারা যে ভুল করেছেন, সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে র্যাব বন্ধ করে দিতে হবে। যারা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ খেলাধুলায় বিশেষ করে ক্রিকেটে যে উন্নতি করছে, নির্যাতনেও সেভাবে উন্নতি করছে। এখানে নির্যাতনের কত ফরম্যাট আছে, তা ভাবা যায় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ এখন নির্যাতনের স্বর্গরাজ্য। এখানে বিভিন্নভাবে নির্যাতন হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলবো, দয়া করে আপনাদের কণ্ঠ উচ্চকিত করুন। অধিকারের সভাপতি সি আর আবরারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী সংস্থা-ওএমসিটির সাবেক মহাসচিব এরিক সটাস, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা নূর খান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।