যানজট আর অবৈধ দোকানপাটের শহর নবীগঞ্জ পৌরসভা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুন ২০১৬, ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : যানজট আর ভাঙ্গা রাস্তার শহরে পরিণত হয়েছে এ গ্রেডের নবীগঞ্জ পৌরশহর। নবীগঞ্জ পৌরশহরে প্রতিদিনই যানজটের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী ও সাধারণ মানুষজন।
এদিকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না গাড়ীর মালিক-শ্রমিকরা। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে যত্রতত্র স্থানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সিএনজি অটোরিক্সা, টমটম ও মিনি বাসের অবৈধ স্ট্যান্ড। দেখে মনেই হয় না নবীগঞ্জ একটি এ গ্রেডের পৌরসভা।
অথচ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে বর্তমান মেয়র নানা রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়ে আর উন্নয়নের ফুলঝুড়ি ঢেলে ধোকা দিয়ে ক্ষতায় গিয়ে উন্নয়নের তো কোন নামই নেই বরং সাধারন নাগরিকদের উপর ৮০% পৌরকর আদায়ের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন। আর রাস্তায় অবৈধ দোকানপাট আর যানজট তো নবীগঞ্জের নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র।
এছাড়া নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্টায় নবীগঞ্জ মধ্য বাজার সংলগ্ন তোয়া বাজারের জন্য পৌরসভা কর্তৃক গ্রোথ সেন্টার নির্মান করা হয়। কিন্তু কিছুদিন ঐ গ্রোথ সেন্টারে সাধারণ ব্যবসায়ীরা তোয়া বাজারের ব্যবসায় করে আসলেও বেশ কিছুদিন ধরে কিছু প্রবাবশালী কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা ভিতর বাজার ব্যবসায়ীদের বাধাঁ উপেক্ষা করে মধ্য বাজার গলিতে ব্যবসা নিয়ে বসায় বাজারের পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। যার ফলে ভিতর বাজারের সবসময় কাদা লেগে থাকায় সাধারণ মানুষের চলাফেরায় দেখা দিয়েছে মারাত্মক সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধা পৌর কর্তৃপক্ষের কোনোরূপ নজর না থাকায় জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন!
এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে মেইন রাস্তার উপর বড় বড় ট্রাক দাড় করিয়ে লোড, আনলোড করা হয় ধান-চাল, কাঁচামাল, বাজেমালসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। রাস্তার উভয় পাশে দাড়িয়ে থাকে সিএনজি। এতে প্রতিদিনই লাগছে যানজট, এতেই বাড়ছে ভোগান্তি। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এটি নিরসনের দায়িত্ব কার..? পৌর কতৃপক্ষ নিরব কেন? এ সব যেন পৌর কতৃপক্ষের নজড়ে আসছেনা।
পৌর কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নিরব ভূমিকা নিয়েও সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। গেল পৌর নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচিত বর্তমান মেয়র যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন নাগরিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস দিয়েছিলেন। নির্বাচিত হলে পৌর সভার গাড়ীকে এম্বুলেন্স বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস দিয়ে বর্তমানে নিজেই এ গাড়ী চড়াতে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন! এই আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই শহরে তীব্র যানজটে অতিষ্ট শহরবাসী।
স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা, চাকুরীজীবি, কর্মজীবি ও পেশাজীবিসহ নাগরিকদের চরম ভোগান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে এই যানজটের কারনে। উপজেলা প্রশাসন যানজট নিরসনে উদ্যোগী ভূমিকা নেয়ার জন্য একাধিকবার আইনশৃংখলা মিটিংয়ে পৌরসভাকে তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও পৌর কর্তৃপক্ষের নীরবতায় হতাশা দেখা দিয়েছে জনসাধারনের মাঝে। যানজটের কারনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই। তাদের দাবী, বিএনপির মেয়র হওয়ার কারনে, সরকারকে নিয়ে সাধারণ মানুষের বিরূপ মনোভাব তৈরী করার হীন উদ্যোশেই মেয়র যানজট নিরসনের কোন উদ্যোগ গ্রহন করছেন না।
শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, থানার পয়েন্ট, ওসমানী রোড (উত্তরা ব্যংকের সামন), হাসপাতাল সড়কের খালিক মঞ্জিলের সামন, হাসপাতালের গেইটের নিকট, শেরপুর রোডের রাজা কমপে¬ক্সের সামন, শেরপুর রোডের বাংলা টাউনস্থ ইসলামী ব্যংকের সামন, রুদ্রগ্রাম রোডের সোনার খনি-ব্রীজ পর্যন্ত, এছাড়াও শহরের নতুন বাজার মোড়, প্রায় সময়ই প্রধান সড়কের উপর দাড়ানো থাকে সারি সারি ছোট বড় গাড়ী। এসময় পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে শহরের যানজট নিরসনের জন্য একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি আজও। মাঝে মধ্যে অভিযান হয় কিন্তু অভিযান বন্ধ হলেই যে যার মতো করে রাস্তার উপর গাড়ি দাড় করিয়ে যানজটের সৃষ্টি করে। চলতি মাসের আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে যানজট নিরসনের জন্য পৌর কতৃপক্ষকে দায়ী করেন নেতৃবৃন্দ।