বালাগঞ্জ হাসপাতালে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০১৬, ৯:৫০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ জনগণের দোড়গোড়ায় সরকারী স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও সরকারের উদাসীনতার কারণে এ প্রতিষ্ঠানটি কয়েক লক্ষাধীক উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবায় তেমন কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না।
প্রায় অর্ধশতাধিক বছর পূর্বে নির্মিত হাসপাতালের ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। নেই নিরাপত্তা দেয়াল। অযতেœ আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এ্যানেস্থেশিয়া, সিজারিয়ান সেট, ইনকিউবেটর, স্পাকিং মেশিন ও ডায়াথার্মিসহ অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে পুরনো এ্যাম্বুলেন্সটি অচল হয়ে পড়ে। এরপর দুটি এ্যাম্বুলেন্সের দাবি করা হলেও ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাসপাতালে নতুন একটি এ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়। ২০০৪ সালের ২১ অক্টোবর থেকে এক্স-রে মেশিনটি অচল অবস্থায় রয়েছে। ১৯৯৩ সালে একটি জেনারেটর সরবরাহ করা হলেও ২০০০ সাল থেকে সেটা নষ্ট হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বিঘœতার সৃষ্টি হচ্ছে। রাতের বেলা লোডশেডিং শুরু হলে হাসপাতাল এলাকায় ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। ফলে চিকিৎসাধীন রোগী এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকরা থাকেন অজানা আতংকে।
মেটারনিটি বিভাগটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় গর্ভবর্তী ও প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসাসেবা সম্ভব হচ্ছে না। ২০০১ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলের আর্থিক সহায়তায় ‘মেডিকেল এডুকেশন ফর এসেনশিয়াল হেলথমীড’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে এই মেটারনিটি বিভাগটি চালু করা হয়। একটি মাত্র অপারেশন করার পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ বিভাগটি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, জরাজীর্ণ হাসপাতাল ভবন, পেশেন্ট ওয়ার্ডের ভেতর দিকে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পড়া, হাসপাতালে জনবল শূন্যতা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব, হাসপাতালের চিকিৎসকদের হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান না করা, পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ না করাসহ নানা সমস্যার নিরসন ও হাসপাতালকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে চিকিৎসাসেবার সার্বিক মান উন্নয়নের দাবিতে এক বছর পূর্বে সচেতন বালাগঞ্জবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছিল। পেরিয়ে গেলেও হাসপাতালে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি কিংবা সমস্যা নিরসনে কার্যত কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি।
‘চাই না হারাতে প্রিয়জন, সুচিকিৎসা প্রয়োজন’ এই শ্লোগানে গত বছরের মতো এবারও আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, সিভিল সার্জনের অফিস ঘেরাও, স্মারকলিপি পেশ, মানববন্ধন ও গণসমাবেশ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনিসুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের সমস্যাগুলোর বিপরীতে কোনো প্রতিকার না হওয়ায় চিকিৎসাসেবা বিঘিœত হচ্ছে।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের একাধিক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, সমস্যাগুলো কর্তৃপক্ষের নজরে আছে এবং তা ধারাবাহিকভাবে নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।