পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনে যেতে পারছে না সিলেট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০১৬, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ ১৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে নির্মাণ করা হয়েছিল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। নির্মাণ শেষে প্রতিদিন ২ কোটি ৮০ লাখ লিটার পানি পরিশোধনের কথা এ প্লান্টে। কিন্তু বাস্তবে পরিশোধন হচ্ছে মাত্র ৭০ থেকে ৮০ লাখ লিটার পানি। ফলে নির্মাণকাজ শেষ হলেও এ পানি শোধনাগারটি এখন পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ১৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট নগরীর কুশিঘাটে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ শেষ হলেও পূর্ণাঙ্গ উত্পাদনে যেতে পারছে না এটি। পরীক্ষামূলকভাবে ৭০ থেকে ৮০ লাখ লিটার পানি পরিশোধন হলেও এতে চাহিদা মেটছে না নগরবাসীর।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, সুরমা নদীতে নাব্য সংকটের কারণে সক্ষমতা অনুযায়ী পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। ফলে সক্ষমতার এক-তৃতীয়াংশ পানিও এখন এ প্লান্ট থেকে পাওয়া যায় না। চলতি মাসেই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আমাদের কাছে প্লান্টটি হস্তান্তর করবে।’
তবে প্লান্ট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান বলেন, প্লান্টের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা। উদ্বোধনের আগেই আমরা সিসককে প্লান্ট হস্তান্তর করব।
পানি শোধনাগারটিতে তেমন কোনো যান্ত্রিক সমস্যা নেই দাবি করে তিনি বলেন, নাব্য সংকটের কারণে সক্ষমতার চেয়ে কিছুটা কম পানি উত্তোলন হচ্ছে। আমরা এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
সিলেট নগরীতে প্রতিদিন গড়ে আট কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদার বিপরীতে আড়াই থেকে তিন কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ কোটি লিটার পানির ঘাটতি থাকছে। বর্তমানে নগরবাসীকে চাহিদার মাত্র ৪০ শতাংশ পানি সরবরাহ করতে পারছে সিটি করপোরেশন। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চাহিদার ৮০ শতাংশ পানি সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল সিটি করপোরেশনের।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৬ সালে সিলেট নগরীর তোপখানায় একটি পানি শোধনাগার স্থাপন করা হয়। এর পর নগরীর নাগরিকদের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়লেও নতুন করে কোনো পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হয়নি। ফলে দেখা দেয় তীব্র পানি সংকট। এ সংকট নিরসনে মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নগরীর কুশিঘাটে ২৩ বিঘা ভূমির ওপর বৃহত্ পানি শোধনাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০৯ সালে সিলেট-বরিশাল পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্পের জন্য ১০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে একনেক। পানি শোধনাগার ছাড়াও পাইপলাইন ও নলকূপ স্থাপনের জন্য এ অর্থ ছাড় দেয়া হয়। একই বছরে নির্মাণকাজও শুরু হয়। ২০০৩ সালের শুরুতে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। পরবর্তীতে এ প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত আরো ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।