বিয়ে বাড়িতে ইউএনও, বৌ সাজলেন ভাবী
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ৪:২৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এক বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে বরকে ২ হাজার টাকা জরিমানা ও কাজীকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান ছাড়াও মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বাল্যবিবাহ দিবেন না মর্মে মেয়ের বাবার থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার।
দণ্ডপ্রাপ্ত কাজী রেহান রেজা (৪৭) চেংমারী গ্রামের হুমায়ুন রেজার ছেলে। তিনি খানপুর ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজ করেন। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটশন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটশন এলাকায় একজন ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রীর বিয়ে দেওয়ার প্রায় সব আয়োজন শেষ, বিয়ের জন্য কাজীর খসড়া লেখাও শেষ পর্যায়ে। এমন খবরের সত্যতা যাচাই করার জন্য থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার। এ সময় ইউএনও’র উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী দৌড়ে পালাতে চেষ্টা কালে তাকে আটক করে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান ও বরকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রশাসনকে বোকা বানানোর জন্য তখন বরের পাশে কনে সেজে মেয়ের ভাবি বসে পড়েন। ইউএনও’র নজরে আসে বিষয়টি।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন খবরের সত্যতা পেয়েছি। বাল্যবিয়ের বর রুবেল হোসেনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে আর নিকাহ্ রেজিস্ট্রার রেহান রেজাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাল্যবিবাহে শিশু, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। উপজেলায় যেন কোনো কিশোর-কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার না হয়, সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে এবং জনস্বার্থে এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।