সিলেটে ছাত্রলীগের শোডাউন, উত্তেজনা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চলছে সিলেট ছাত্রলীগে। মুখোমুখি নেতাকর্মীরা। চলছে মহড়া পাল্টা মহড়াও। বিশেষ করে মোটরসাইকেল মহড়ায় আতঙ্ক নগরীতে। কমিটি গঠনে উৎফুল্ল নেতাকর্মীরা হঠাৎ করেই মোটরসাইকেল মহড়া দেন। তাদের মহড়ার কারণে বঞ্চিতরাও সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এদিকে- গতকাল সিলেটে কমিটি বাতিলের দাবিতে শোডাউন করেছে ছাত্রলীগের ক্ষুব্ধ অংশের নেতারা। তাদের শোডাউনের কারণে নগরীর চৌহাট্টা থেকে বন্দরবাজার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
পরে চৌহাট্টা পয়েন্টে সমাবেশ করে তারা ঘোষণা দিয়েছেন; ঘোষিত জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। টাকা দিয়ে কেনা কমিটি তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। দীর্ঘ চার বছর স্থবির থাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি নিয়ে তোলপাড় দেখা দেয় সিলেটে। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়ে ছাত্রলীগের বলয় নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। গত মঙ্গলবারই তারা সিলেটে ব্যাপক শোডাউন করে কমিটি বাতিলের দাবি জানান। ওই দিন সন্ধ্যায় নগরীর আম্বরখানা এলাকায় ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের বাসায় হামলার ঘটনা ঘটে। নবগঠিত ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ তেলীহাওর অংশের নেতারা। বুধবার সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল দুপুরের পর থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন তেলীহাওরে। সেখান থেকে হাজারো নেতাকর্মীরা মিছিল শুরু করে। এ সময় তারা কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটিতে গ্রহণযোগ্য নেতাদের স্থান দেয়ার দাবি জানায়। মিছিলটি কোর্ট পয়েন্ট ঘুরে এসে চৌহাট্টা পয়েন্টে জড়ো হয়। অন্যদিকে- মহানগরের ক্ষুব্ধ বলয়ের নেতারা নগরীর সড়ক ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে। মিছিলটি এসে চৌহাট্টা পয়েন্টে মিলিত হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ অংশের নেতারা সড়ক অবরোধ করেন। তাদের বিক্ষোভের কারণে কোর্ট পয়েন্ট থেকে আম্বরখানা সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। এই যানজটে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থবির ছিল সিলেট নগরী। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তেলীহাওর অংশের শীর্ষ নেতা শাহরিয়ার আলম সামাদ। তিনি জানান- টাকা দিয়ে কেনা এই কমিটি তারা মানেন না। সিলেট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও এই কমিটি মানেন না। অবিলম্বে এই কমিটিকে বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করতে হবে। আর এতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের স্থান দেয়ার আহ্বান জানান।
সামাদ বলেন- আমাদের ক্ষোভ, আমাদের আন্দোলন হচ্ছে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে। যতদিন কমিটি বাতিল না হবে ততদিন পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। রাজপথ ছেড়ে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফিরবে না। সমাবেশের পর জেলা ও মহানগরের বঞ্চিত নেতারা চলে যান।
এদিকে- ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে ফের সরব হয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের গ্রুপ, উপ-গ্রুপের নেতারা। প্রতিদিন নেতাকর্মীরা নিজেদের বলয়স্থানে অবস্থানে রয়েছেন। বিশেষ করে কমিটিতে পদ পাওয়া বলয়ের নেতাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস চলছে। তাদের বলয়ের নেতারা মিষ্টি বিতরণ, দায়িত্বপ্রাপ্তদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। শুধু সিলেটের নেতারাই নয়, বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নেতারাও এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বঞ্চিত অংশের সঙ্গে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। নগরীর দর্শন দেউরী এলাকায় মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সৌরভ ও টিলাগড় এলাকা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল বলয়ের নেতারা অবস্থানে রয়েছেন। তারা ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে আনন্দ উচ্ছ্বাস করছেন। আবার টিলাগড়েই জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদের বাসায় বঞ্চিত নেতারা ভিড় করছেন। তাদেরকে সান্ত্বনার পাশাপাশি সহমর্মিতাও জানাচ্ছেন বলয়ের শীর্ষ নেতারা।