সুনামগঞ্জে অর্ধশত মামলায় ৭০ শিশুর ব্যতিক্রমী শাস্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ৩:৫৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সুনামগঞ্জের বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে ৫০ মামলায় লঘু অপরাধে অভিযুক্ত ৭০ শিশুকে কারাগারে না পাঠিয়ে ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছে আদালত। ছয় শর্তে সংশোধনের জন্য তাদের মা-বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে সকল শিশুকে ফুল ও একটি করে ডায়েরি দেওয়া হয়। এ সময় ৭০ শিশুর মা-বাবা ও স্বজনরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সুনামগঞ্জ শিশু ও মানবপাচার আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ৭০ শিশুকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ৫০ মামলায় জড়ানো হয়েছিল। এসব শিশুকে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হতো। ফলে শিশুদের ভবিষ্যৎ ও শিক্ষা জীবন ব্যাহত হচ্ছিল। তাই শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে সব মামলা নিষ্পত্তি করে দিয়েছে আদালত।
এদিকে আদালতের ছয়টি শর্তে বলা হয়েছে, এসব শিশুকে প্রতিদিন দুটি ভালো কাজ করে আদালতের দেওয়া ডায়েরিতে লিখে রাখতে হবে এবং বছর শেষে ডায়েরি আদালতে জমা দিতে হবে। মা-বাবা ও গুরুজনদের আদেশ মানতে হবে। তাদের সেবাযত্ন ও কাজে সাহায্য করতে হবে। নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে হবে। অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে ও ভবিষ্যতে অপরাধের সঙ্গে জড়ানো যাবে না। এসব শর্ত শিশুরা সঠিকভাবে প্রতিপালল করছে কিনা তা এক বছর পর্যবেক্ষণ করবেন জেলা সমাজসেবা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সফিউর রহমান।
আদালত আরো বলছে, এ রায়ে অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হলো। শিশুরা তাদের আপন ঠিকানা ফিরে পেল। মা-বাবার দুশ্চিন্তার অবসান হলো এবং সন্তানকে নিজের কাছে রেখে সংশোধনের সুযোগ পেল।
জেলা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সফিউর রহমান বলেন, শিশু আদালত ৫০ মামলায় ৭০ অভিযুক্ত শিশুকে ছয় শর্তে প্রবেশনে এক বছরের জন্য মুক্তি দিয়েছেন। শিশুরা আদালতের শর্ত ঠিকমতো প্রতিপালন করছে কি না তা আমি দেখব।
সুনামগঞ্জ শিশু ও মানবপাচার আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী বলেন, বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে বিচারক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। এ রায়ে ৫০ মামলায় অভিযুক্ত ৭০ শিশু ছয় শর্তে তাদের মা-বাবার কোলে ফিরে গেল। তারা এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেল।