সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় হচ্ছে দেশের বৃহত্তম ‘স্বপ্নের উড়াল সড়ক’
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ অক্টোবর ২০২১, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
দেশের হাওরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উড়াল সেতুসহ রাস্তা নির্মাণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে। আর এই প্রকল্পটির এর সম্ভব্য নাম ‘শেখ হাসিনা উড়াল সড়ক’ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা মহাসড়কের মান্নানঘাট থেকে গুল্লা গ্রাম হয়ে ধর্মপাশার মধুপুর পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিমি স্থানে গভীর হাওরে উড়াল সেতুসহ রাস্তা নির্মাণ এবং দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে স্বল্প সময়ে সুনামগঞ্জ থেকে নেত্রকোনা এবং নেত্রকোনা থেকে ঢাকা আসা-যাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও খুলে যাবে হাওর কেন্দ্রিক পর্যটনের নতুন দুয়ার।
সুত্র জানায়, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে সরকারের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। প্রকল্পের সম্ভাব্য মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এই প্রকল্পে প্রায় ১০৭ কিমি দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মিত হবে। আরো ২৮ কিমি ডুবন্ত সড়ক, ইউনিয়ন ও উপজেলা সড়ক সংযোগ থাকবে। উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ও ইউনিয়ন সড়কে ৬৮৫ মিটার সেতু এবং ৭৭৫ মিটার কালভার্টও নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের সবকিছুই হবে দৃষ্টিনন্দন ও চোখ ধাঁধানো। প্রকল্পটি চলতি মাসেই একনেকে অনুমোদিত হওয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ হাওরের প্রকৃতি বিবেচনা করেই বিরল উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজ প্রধানমন্ত্রীর মাথা থেকেই এসেছে।
উড়াল সড়কের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সহজেই দেশ-বিদেশের পর্যটকরা সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে হাওরের উড়াল সড়ক দিয়ে নেত্রকোনা হয়ে ঢাকায় চলে যেতে পারবে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা হোটেল-মোটেল নির্মাণ, হাওরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা-স্পিডবোটসহ নানা জলযান তৈরি করবে। ফলে হাওরাঞ্চলে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জানা গেছে, সরকারিভাবে উড়াল সড়কের দুই পাশে কিছু দূর দূর ‘ইয়ূথ হোস্টেল’ গড়ে তোলা হবে। টিনসেডের বাংলো’র মতো হোস্টেলও থাকবে। সেখান থেকে হাওরের প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। সেখানে নিরাপদ পানি ও রান্নাবান্নার ব্যবস্থা থাকবে।
খুব শিগগিরই স্বপ্নের উড়াল সড়ক বাস্তবায়ন হচ্ছে এমন ইঙ্গিত দিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। গত শনিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,‘আমরা সুনামগঞ্জের সাথে ময়মনসিংহের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালসড়ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ হাওরের মধ্যদিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে তা টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন। যখন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়, তখন প্রকৌশলীরা হাওরের মধ্যদিয়ে সড়ক নির্মাণে আপত্তি তোলেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার উড়ালসড়ক নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন।
খুব শিগগিরই এই উড়ল সড়কের নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
শুধু তাই নয়, ময়মনসিংহের সাথে সিলেটের সরাসরি রেলযোগাযোগ স্থাপনে কাজ চলছে। এজন্য জরিপ কার্যক্রম চলছে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। এছাড়া সুনামগঞ্জের রানীগঞ্জে একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। এটি সমাপ্ত হলে সুনামগঞ্জের সাথে রাজধানী ঢাকার দুরত্ব ৭০ কিলোমিটার কমবে।