সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটি নিয়ে তোলপাড়!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০২১, ১:০১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ৩ বছর মেয়াদী কমিটির ২ বছর পেরিয়ে গেলেও এতদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। অথচ অতি সম্প্রতি মহানগর আ’লীগকে অবগত না করেই গোপনে কমিটি গঠনের খবর ছড়িয়ে পড়েছে নগরে। এমন খবরে বিক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতৃবৃন্দ মহানগর আ’লীগের সভাপতির কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তারা গণমাধ্যমের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আর মহানগর যুবলীগের দায়িত্বশীলরা এই খবরটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।
তিন বছর মেয়াদী কমিটির দু’বছর পেরিয়ে গেলেও সিলেট মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আর হয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে বারবার কমিটি গঠনের বিষয়টি পিছিয়েছে। কিন্তু অতি সম্প্রতি কঠোর গোপনীয়তার মধ্যদিয়ে, কমিটি গঠন করে ঢাকায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন, স্বয়ং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিনও।
এমন একটা খবর শুনে বিক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতৃবৃন্দ সোমবার সন্ধ্যায় ছুটে যান মাসুক উদ্দিনের বাসায়। সেখানে তারা তাদের সব অভিযোগ উত্থাপন করেন। তারা তাকে অবগত করেছেন যে, যে কমিটি পাঠানোর খবর শোনা যাচ্ছে সেই কমিটিতে গত আহ্বায়ক কমিটির অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন। এ সময় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, যারা আমার কাছে এসেছেন তারা সবাই আমার ছোট ভাই তুল্য। ইদানিং একটা কমিটি গঠনের খবর আমরা শুনছি। সত্য মিথ্যা আমাদের জানা নেই। কেউ জানায়ওনি।
ঢাকায় তারা গিয়েছেন কি না আমরা জানিনা। তাছাড়া আমাদের কেউ কোনদিন কিছু জিজ্ঞেসও করে নাই। এইভাবে যদি এই দুর্দিনে যারা যুবলীগ থেকে এক্স হয়ে গেছে আমার জানা মতো সেরকম অন্তত ৫০ জন নেতা যারা একসময় ছাত্রলীগ- যুবলীগও করেছে। তারা ভালো ছেলে-তাদের বাদ দিয়ে সংগঠন চালানো মুশকিল হয়ে যায়।
কিন্তু টোটালি আমাদের কিছু জিজ্ঞেসই করেনি কেউ। যারা এখন নিজেদের যুবলীগ নেতা দাবি করছে, কমিটি সাইন না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদেরকে স্বীকৃতি দিতে পারিনা। কারণ, কেন্দ্র থেকে এখনো আমরা কোন চিঠি পাইনি।
তিনি বলেন, এই কভিড পিরিয়ডে আমরা কমিটিতে কে আছে কে নাই সে চিন্তা না করে নেত্রীর নির্দেশিত পথে চলি। কারণ তিনিই আমাদের শেষ ভরসা। তিনি বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি- সেক্রেটারির কাছে গেলে একটা সঠিক সমাধান পাওয়া যাবে বলেও পরামর্শ দিয়েছেন।
এসময় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রায়হান আহমদ বলেন, দু’বছর পেরিয়ে গেলেও আরও একবছরতো আছে। এই এক বছরের মধ্যে মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দিতে পারবেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কমিটি পাঠানো হয়েছে বলে শুনছি, সেটাতে যদি বিতর্কিত কেউ থাকেন তাহলে তাদেরকে বাদ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা। অবশ্যই ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
তবে কমিটি গঠনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার। মুক্তি বলেন, বিষয়টি মোটেও সত্য নয়। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কভিড পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছি। আপনারা তা জানেন। এসময়ে কমিটি গঠনের বিষয়টি যারা তুলছেন যুবলীগের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। কোন কর্মসূচিতে তাদের খুব কম পাওয়া যায়। দেশের এই দুর্দিনে আমরা জনগনের জন্য জনকল্যাণে কাজ করছি।
একই কথা জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার। তিনি বলেন, মনের জ্বালা ও সন্দেহ থেকে তারা এমনটি করছেন বা বলছেন। আমরা এখনো কমিটি গঠন করিনি বা ঢাকায়ও পাঠাইনি। আপনারা চাইলে ঢাকায় যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।