আতঙ্কের নাম ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক : ১৫ কারণে ঘটে দুর্ঘটনা, ১ বছরে প্রাণ গেছে ২৫০ জনের
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ মার্চ ২০২১, ৩:১৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
রেলের মতো সিলেট-ঢাকা মহাসড়কও যেন আতঙ্কের এক নাম। দুই লেনের এই মহাসড়কে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষত মহাসড়কের সিলেট অংশে দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব মতে, গত বছরেই শুধু সিলেটে ১৮৭ দুর্ঘটনায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে। যার বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই ঘটেছে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপ্রশস্ত সড়ক, অপ্রশিক্ষিত চালক, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন চলাচল, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চলাচলসহ কয়েকটি কারণে এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে বেশি।
সিলেটে রেলপথও দেশের সবচেয়ে দুর্ঘটনাপ্রবণ। সড়ক পথেও ঘন ঘন ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে সিলেটের যাত্রীদের জন্য সড়ক ও রেলপথ দুটিই হয়ে ওঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ।
সর্বশেষ গত শুক্রবার এই সড়কের দক্ষিণ সুরমার রশিদপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৮ জন। এতে আহত হন আরও অন্তত ২০ জন।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ১৫টি বিষয়কে চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হচ্ছে- বেপরোয়া গতি, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ, ছোট যানবাহন বৃদ্ধি, সড়কে চাঁদাবাজি, রাস্তার পাশে হাট-বাজার ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ঘনঘন দুর্ঘটনা সম্পর্কে হাইওয়ে পুলিশ সিলেট জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শেখ মাসুদ করিম গণমাধ্যমে বলেন, এই সড়কে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে রাতের বেলা বা ভোরে। দিনে পুলিশের নজরদারির কারণে গাড়ির গতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু রাতে পুলিশের টহল সীমিত হয়ে আসে। এতে চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এ কারণেই বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মহাসড়কে অটোরিকশাসহ অনেক ছোট যানবাহন চলে। এছাড়া অনেক গাড়ির কাগজ নেই, চালকদের লাইসেন্স নেই। চালকরা অপ্রশিক্ষিত ও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞ। যারা আইন জানে তারাও মানতে চায় না। আবার নির্ধারিত ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী ও পণ্য নিয়ে চলাচল করে অনেক গাড়ি- এসব কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে।
শেখ মাসুদ করিম বলেন, এসবের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিদিনই অভিযান চালাই। প্রতিদিন অনেক মামলা করি। তারপরও চালকরা এসবের তোয়াক্কা করেন না। সড়কের অন্য যানবাহান ও যাত্রীদের প্রতি তাদের সমীহ নেই। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান।