সিলেটে পুলিশের বিরুদ্ধে দুই ব্যবসায়ীকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৮:৫৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
পূর্বশত্রæতার জের ধরে সিলেট নগরীর দুই ব্যবসায়ীকে পুলিশ মাদকের মামলায় ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীরা জড়িত পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত করে বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
ওই ব্যবসায়ীরা হলেন খন্দকার ফজজুর রহমান (ইফতেখার) ও মোঃ মাজেদ আহমদ ইমন। তাদের নগরীর চালিবন্দর কয়েদি মাঠ হাওর সংলগ্ন স্বদেশ গরু খামার ও মোটা তাজাকরণ প্রকল্প নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান খন্দকার ফজজুর রহমান (ইফতেখার)। এতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৬ ফেব্রæয়ারী রাত ৮টায় তিনিসহ তাঁর ব্যবসায়ী পার্টনার মাজেদ আহমদ ইমন নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাইভেট কার যোগে এক বন্ধুকে নগরীর বাদামবাগিচাস্থ বাসা পৌঁছে দিতে বের হন। বন্ধুকে বাসায় নামিয়ে ফেরার পথে পীর মহল্লার রহমানিয়া মাদ্রাসার সামনে আসা মাত্র সাদাপোশাকের কয়েকজন তাদের গাড়ীর গতিরোধ করে। এ সময় একজন নিজেকে এস.আই বিমল পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ী হতে নামতে বলেন। এরপর ওই পুলিশ সদস্য বলেন মাদ্রাসার আশপাশে সম্ভবত সিসি টিভি থাকতে পারে, চলেন আমরা একটু আড়ালে গিয়ে আলাপ করি। কথা মতো মাদ্রাসার সামনে থেকে একটু আড়ালে গেলে, তিনি বলেন, আপনাদের গাড়ীতে মাদক আছে বলে তল্লাশি করে কিছু পাননি।
এরপর এস.আই বিমল মোবাইলে কারো সাথে কথা বলে হেঁটে সামনে গিয়ে আবার ফিরে আসেন। পরে মাদকাসক্ত হিসেবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে জোরপূর্বক হাতকড়া লাগিয়ে আমাদেরকে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে চিৎকার করে বলি- আমরা মাদক সেবন করে থাকি তাহলে মেডিকেল নিয়ে যেতে হবে। এ সময় চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের অনুরোধে এস.আই. বিমল চন্দ্র দে আমাদেরকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তারকে পুলিশ সদস্য বলেন, মেডিকেল চেক আপ ও ড্রাগ টেষ্ট করতে। ডাক্তার বøাড পেশার এবং ই.সি.জি পরীক্ষা করে রিপোর্ট প্রদান করে বলেন, ড্রাগ টেষ্ট এখন হবে না। এরপর এসআই বিমল ডাক্তারকে চাপ প্রয়োগ করে তার কথামতো লেখা ডাক্তারী ¯িøপে লিখে দেওয়ার জন্য। তখন ডাক্তার বহি বিভাগীয় রোগীর টিকেটের উপর কয়েকটি ঔষধ লিখে দেন। এরপর আমাদেরকে থানায় নিয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই ব্যবসায়ী আরো অভিযোগ করেন, মামলায় যে দুইজনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে তারা ওই এলাকার বাসিন্দা নয়। পাশাপাশি দুজনের কারো মতামত না নিয়েই মামলায় স্বাক্ষী করা হয়। এদের মধ্যে দুই নাম্বার স্বাক্ষী জাহিদুল ইসলাম সুমন সে আমাদের বন্ধু, তাকেই বাসায় পৌছে দিতে আমরা গিয়েছিলাম। অপরজন একটি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে এসআই বিমলের সাথে সেখানে দেখা করতে যান। এতেই প্রমাণিত ঘটনাটি সম্পন্ন উদ্দেশ্যমূলক, মিথ্যাসাজানো।
তিনি বলেন, গত কোরবানী ঈদে আমাদের নিজস্ব ভ‚মির উপর খামারে প্রায় ৩ শতাধিক উন্নত জাতের গরু বিক্রির জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি সাপেক্ষে গরু বিক্রি করি। এ সময় সোবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন আইসি এসআই (নিঃ) বিমল চন্দ্র দে আমাদেরকে পুলিশ ফাঁড়িতে যাওয়ার জন্য বলেন। ফাঁড়ি গেলে কথাবার্তার একপর্যায়ে এসআই বিমল বলেন, আমার ফাঁড়ি এলাকায় গরুর ব্যবসা করতে হলে তাকে রাজি খুশি করতে, দাবী করেন মোটা অংকের চাঁদা (টাকা)। এ বিষয়টি তৎকালীন কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম মিয়াকে মৌখিকভাবে জানাই। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে এসআই বিমল প্রকাশ্যে বলেন এসএমপি’র যে থানায় থাকি না কেন সময় সুযোগমতো আমাদেরকে শায়েস্তা করার। এরই জের ধরে ১৬ ফেব্রæয়ারী মাদকাসক্ত হিসেবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদেরকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি এসআই বিমল চন্দ্র দে-সহ জড়িতকের বরখাস্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি