করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে গুজব-মিথ্যাচার ও আমার কিছু কথা…
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:২১:১৭,অপরাহ্ন ২৫ জানুয়ারি ২০২১
শেখ ইয়াহইয়া:
দেশে গুজব ভাইরাস। করোনা অতিমারি ভাইরাসের মতোও কোনো অংশে কম নয়। করোনা নিয়ে গুজব আর ভুয়া খবরে আক্রান্ত হচ্ছেন শিক্ষিত-অশিক্ষিত প্রায় অনেক মানুষ। আর এই মহামারির কবল থেকে জনগণকে রক্ষা করতে দেশে আনা ভ্যাকসিন নিয়েও চলছে একের পর এক মিথ্যাচার। কিন্তু এসকল মিথ্যাচার আর গুজব শনাক্তকরণ ও বিচারমূলক চিন্তায় দক্ষতা কী আমাদের আছে ?
এবার আসি মূলকথায়, বিএনপি-জামাতসহ গুজব প্রচারকারী ও মিথ্যাচারকারিরা সেরাম কোম্পানির ভ্যাকসিন আর ভারতের বায়োটেক এর ভ্যাকসিনের মধ্যে গুলিয়ে ফেলেছে অনেক গুজব ও ষড়যন্ত্র । অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড অনুমোদন পেয়েছে। ভারতীয় বায়োটেক এখনো ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে। ভারত আমাদের তো বায়োটেক এর ভ্যাকসিন উপহার দেয়নি যে এইটা ট্রায়াল করতে হবে! অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৬০%। কার্যকারিতা ৫০% পেরোলেই সেই ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেয়া হয়। আমরা সকলেই জানি ফাইজারের ভ্যাকসিন ৯৫% কার্যকারিতা দাবি করলেও সেটি খুব তড়িঘড়ি করে মার্কেটে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। দাম ও অনেক অনেক বেশি। ফাইজারের ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও অনেক মানুষের মারা যাওয়ার নিউজ হাইলাইট হয়েছে চাইলে আপনিও গুগল করে দেখতে পারেন।
মূলকথা হল ভাইরাসের মতো অঞ্চলভেদে ভ্যাকসিনও ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে পারে। ফার্স্ট জেনারেশান এর ভ্যাকসিন ব্যাক্তিভেদে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যার্থ হতেও পারে। সেসব ভ্যাক্সিনের সেকেন্ড জেনারেশন কিংবা থার্ড জেনারেশনে ওভারকাম হবে। কোভিড এর বিস্তার ঠেকাতে গেলে দ্রুত ভ্যাক্সিনেশন এর ভেতর দিয়ে যেতে হবে । দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় জেনারেশনের ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করলে আরো ২/৩ বছর আতংকের ভেতর কাটাতে হবে আমাদের।
আরেকটা কথা, আজ দেশে আসছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো ফার্মার মাধ্যমে এই টিকা আসছে। সুতরাং সবার কাছে একটাই অনুরোধ আমরা সবাই চোখ-কান খোলা রেখে চলি। মহামারি মোকাবেলায় সবাই ভ্যাকসিন গ্রহণে ইচ্ছা পোষণ করি। তাতেই আটকা পড়বে গুজব আর মিথ্যাচারের সকল আয়োজন।
সর্বশেষ আমি শেখ ইয়াহইয়া সজ্ঞানে বলছি, ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ২০ লক্ষ ভ্যাকসিন কেউ নিক বা না-নিক আমি এই ভ্যাকসিন নিতে খুবই আগ্রহী। আমাদের দেশের ডাক্তার বা নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মত হয়ত আমি সম্মুখ সারির যোদ্ধা না কিন্ত রাজনৈতিক একজন কর্মী হিসাবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করোনাকালীন শুরু থেকেই আজ অবধি। করোনার ভ্যাকসিন হয়ত এক আমি আমজনতার মত একটা সময় ঠিকই পেতাম। কিন্ত এই মুহুর্তে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপি জামাত যে গুজব ও ষড়যন্ত্র করছে সেজন্য সকলের বিশ্বাসের জন্য আমি ভারতের দেয়া উপহার থেকে ভ্যাকসিন গ্রহন করতে চাই। আবারো বলছি এই চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নিয়েছি কেবল বিএনপি জামাত ও ষড়যন্ত্রকারীদের গুজবের জবাব দিতেই। কথায় নয় কাজেই প্রমান দিতে সবসময় প্রস্তুত।
তাছাড়া সবার কাছে একটাই অনুরোধ নিজের বুদ্ধি, বিবেক আর জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কিংবা সবার উপরে ইংরেজিতে যাকে বলে গাট ফিলিংসের উপর নির্ভর করেই আপনার সিদ্ধান্ত নিন। ভ্যাকসিন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলা কল্পকাহিনীর ভিত্তি কী বা কী ধরনের যুক্তি ও প্রমাণ আছে এসকল তথ্যের তা একটু যাচাইয়ে রাখবেন।
লেখক
শেখ ইয়াহইয়া
ছাত্রলীগ কর্মী, সিলেট।