তাবিজের কেরামতিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ২য় বারের পরীক্ষাও বাতিল!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ৮:২৮ অপরাহ্ণ
একটি ঐশিক ক্ষমতার(!) তাবিজ স্পর্শ করানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা কুলাউড়ার মহতোছিন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহ: প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান সোহেল অজ্ঞান হয়ে যান। শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বেঁেধ যায় চরম হট্টগোল। অসুস্থ শিক্ষককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে ভুন্ডুল হয়ে যায় নিয়োগ পরীক্ষাটি। এই ঘটনাটি শনিবার ২৩ জানুয়ারি বেলা ১২ টায় কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটেছে।
কুলাউড়া থানার এস. আই কানাই লাল চক্রবর্তী জানান, উপজেলার শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহ: প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিলো শনিবার। প্রধান শিক্ষক পদে ৫ জন প্রার্থী এবং সহ-প্রধান শিক্ষক পদে ৪ জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনায় ডিজি’র প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে নিয়োগ পরীক্ষার পূর্ব মুহুর্তে লিখিত পরীক্ষার জন্য হলরুমে প্রবেশের মুহুর্তে প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী আতিকুর রহমান সোহেল বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরি বিপুল বিশ্বাস (৪৫) কে কুশল জিজ্ঞেস করেন। এসময় বিপুল বিশ্বাস একটি তাবিজ সোহেল আহমদের গায়ে স্পর্শ করান। সাথে সাথে সোহেল আহমদ অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে গেলে বেঁধে যায় হুলুস্থুল কান্ড।
পরে শিক্ষক সোহেলকে উদ্ধার করে প্রথমে ব্রাহ্মণবাজারের একটি বেসকারি ক্লিনিকে এবং পরবর্তীতে তাকে সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ওই হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন বলে তার বড় ভাই ফয়জুর রহমান ছুরুক জানান।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বিক্ষোব্ধ নৈশ প্রহরি বিপুল বিশ্বাসকে গণধোলাই দিয়ে বাথরুমে আটকে রাখে। খবর পেয়ে কুলাউড়া কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষন রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক বিপুল বিশ্বাসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
আটক বিপুল বিশ্বাস জানান, সোহেল স্যার আমার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি আমার কাছে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আশির্বাদ চেয়েছিলেন। আমি তাকে প্রভূর দোহাই দিয়ে একটি তাবিজ নিয়ে আশির্বাদ করি। আমার হাতের তাবিজ উনার শরীরে স্পর্শ করানোর সাথে সাথে তিনি অসুস্থতা বোধ করছেন। আমি কোন খারাপ উদ্দেশ্যে কিছু করিনি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম খান বাচ্চু জানান, আমার সামনে এই ঘটনাটি ঘটে। প্রধান শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিতে আসা আতিকুর রহমান সোহেল আমাকে মাথা ঘোরানোর কথা বলে পড়ে যান। তখন তাকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করি।