পাকিস্তানে ধর্ষণ করলেই কেড়ে নেয়া হবে পুরুষত্ব
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪৬:৪৯,অপরাহ্ন ২৫ নভেম্বর ২০২০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানে বেড়েই চলেছে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা। এবার এই অপরাধ রুখতে ধর্ষকদের রাসায়নিকভাবে ‘নপুংসক’ বা ‘খোজাকরণ’ করতে আইন প্রণয়ন এবং যৌননিগ্রহ মামলায় দ্রুত শুনানিতে অনুমোদন দিয়েছে ইমরান খান সরকার। এতে রাখা হয়েছে ফাঁসির বিধান, সেই সঙ্গে ধর্ষণের সংজ্ঞায়ও আনা হয়েছে পরিবর্তন।
মঙ্গলবার এমন দুটি অধ্যাদেশ অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা। শিগগিরই এ আইন কার্যকর হবে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কেবিনেট বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বৈঠকে ধর্ষণবিরোধী অধ্যাদেশ ২০২০ অনুমোদন হয়। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের ইতিহাসে ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হলো। এছাড়া ধর্ষণের শিকার নারীদের বিতর্কিত ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ বাতিলের প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়েছে নতুন এ অধ্যাদেশে।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী শিবলি ফারাজ বলেন, ফেডারেল কেবিনেট ধর্ষণবিরোধী দুই অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে। ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং ধর্ষণের সাজা কঠিন করা হয়েছে। গণধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশ এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ইমরান খান এটাকে গুরুতর বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য। এ ব্যাপারে কোনো গাফিলতি তিনি বরদাস্ত করবেন না। আইন দ্রুত পাস হয়ে কড়াভাবে প্রয়োগ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘নির্যাতিতারা নির্ভয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। তার এবং তার পরিবারের সুরক্ষা এবং পরিচয় গোপন রাখার দায়িত্ব সরকারের।’
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান সরকার এন্টি রেপ (তদন্ত ও বিচার) অর্ডিন্যান্স ২০২০ এবং পেনাল কোড অর্ডিন্যান্স ২০২০ অনুমোদন দিয়েছে। দেশটির ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো ঘটনা; যেখানে হিজড়া ও গণধর্ষণের সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দেশটির মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী শিরীন মাজারি এক টুইটে বলেছেন, এই দুটি অধ্যাদেশ কেবিনেট কমিটি নানা দিক বিচার বিশ্লেষণ করে অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করবে। কয়েক দিনের মধ্যেই অধ্যাদেশ দুটি কার্যকর হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে লাহোরে ধর্ষণ করে খুন করা হয় এক ৭ বছরের শিশুকন্যাকে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের জন্য কড়া আইনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। গত বছর ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল পাকিস্তানে ডাক্তারি অধ্যনরত ছাত্রী নম্রিতা চান্দানিকে। ২০২০ সালে পাকিস্তানে এক যুবতীকে গণধর্ষণের পর নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটায় তিন যুবক। পাশবিক এই ঘটনাটি ঘটে রাওয়ালপিন্ডি শহরের ওয়ারিস খান এলাকায়। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও পরে ছাড়া পায় সে। সেবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এতদিন নতুন কোনো আইন আনেনি পাকিস্তান সরকার। কিন্তু লাগাতার বাড়তে থাকা ধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার নতুন আইনের দিকে গেলেন ইমরান খান।
সূত্র: এনডিটিভি, জিও টিভি