পশুর হাটে ক্রেতা বাড়লেও বিক্রি বাড়েনি, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জুলাই ২০২০, ১০:২৮ অপরাহ্ণ
রাসেল আহমদ:
একদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের আতংক ও টানা কয়েক মাসের লাগামহীন মুষলধারের বৃষ্টি এবং প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে ওসমানীনগরের পশু কেনাবেচার হাট বাজার গুলোতে ক্রেতা বিক্রেতা ও পশুর সংখ্যা বাড়লেও পশু বিক্রির সংখ্যা হাতে গোনা। তাই বড় ধরনের লোকসানের আশংকায় রয়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে আবার গরুর লাম্পই রোগ ভোগান্তি আরো বাড়িয়েছে। প্রতি বছর কোরবানী ঈদের আগে গোয়ালাবাজারের গরুর হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার বিক্রেতা গরু কিনতে ও বিক্রি করতে আসলেও করোনা ঝুকি, আগাম বন্যা এবং ইজারাদার কর্তৃক অধিক ছিট মুল্যের (৭%) কারণে এ বছর ক্রেতা শুন্য হয়ে পড়েছে উপজেলার এই জমজমাট পশুর হাট । উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, ওসমানীনগর উপজেলায় মোট রেজিস্টার প্রাপ্ত খামার রয়েছে ৪০টি ও রেজিস্টারবিহীন খামার রয়েছে ৬০টি এবং ক্ষদ্র খামার রয়েছে প্রায় ১৫০০টি। মোট রেজিস্টার প্রাপ্ত গরু মোটাতাজাকরণ খামার রয়েছে ১০টি এবং রেজিস্টার ছাড়া রয়েছে প্রায় ১৫০টির মতো। প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দু-একটি করে গরু প্রায় প্রতিটি পরিবারেই লালন-পালন হয়ে থাকে। এ বছরেও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৪০-৫০ হাজার গরু লালন-পালন করা হয়েছে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য। পশু বিক্রি না হলে বিরাট লোকসানের শঙ্কায় আছেন তারা। ন্যায্য দাম না পেলে পথে বসতে হবে তাদের। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসের কারনে বিগত দিন গুলোতে হাট গুলো ক্রেতা শূন্য থাকলেও সময়ের ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ক্রেতা ও পশুর সংখ্যা বেড়েছে । ক্রেতা ও পশুর সংখ্যা বাড়লেও সেই অনুপাতে বাড়েনি বিক্রির সংখ্যা। তবে শেষ দিকে বিক্রি বাড়ার আশা করছেন বিক্রেতারা। তবে বিগত বছর গুলোতে ভারতীয় গরুর প্রাধান্য থাকলেও এবারের ইদে তা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। উজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুরবাজার, উমরপুর বাজার ঘুরে ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়। উপজেলার তরুন খামারি জুবেদ আহমদ জানান, এবারের ঈদে তিনি ১০টি গরু লালন পালন করেছেন । করোনার কারনে ক্রেতার সংখ্যায় কম হওয়ায় তিনি গরুর ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শংকায় আছেন । হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি হাতে গোনা কিছু ক্রেতারা দামদর করলেও একটি গরু ও বিক্রি করতে পারেননি তিনি। উপজেলার গোয়ালা বাজারের আরেক প্রসিদ্ধ খামারি কবির আহমদ জানান, গরু ও ক্রেতার সংখ্যা বাড়লেও আশানুরুপ হারে গরু বিক্রি হচ্ছে না। এর কারন হিসেবে তিনি করোনার ঝুকি , আগাম বন্যা ও ৭% হারে ছিট মুল্যকে দায়ী করছেন । উপজেলার তাজপুর, উমরপুর ও গোয়ালা বাজারে গরু কিনতে আশা একাধিক ক্রেতারা বলেন, বাজারে গরুর দাম বিগত বছরের তুলনায় অনেক কম রয়েছে । জানা যায়, গোয়ালা বাজারের পশুর হাটে শনিবার র্পযন্ত ছিট ভাড়া ৭% ছিল রবিবার থেকে ৫% হারে ছিট ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কোরবানির এমন সময়ে গোয়ালাবাজার হাটে যেখানে প্রায় লাখের কাছাকাছি পশু বিক্রি হয় সেখানে অন্য বছরের তুলনায় বিক্রির সংখ্যা একেবারে নগন্ন ।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বড় খামারি ছাড়াও প্রায় প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি ঘরে কৃষকরা একটি দুটি করে গবাদি পশু লালন পালন করে থাকেন। এ রকম ছোট-বড় খামারি ও এর বাহিরে অসংখ্য মানুষের ভবিষ্যতে হানা দিয়েছে করোনার থাবা। তবে ইতিমধ্যে উপজেলায় বেশ কয়েকটি খামার পরিদর্শন করেছি এবং খামারিদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শ দিয়েছি।