বালাগঞ্জে ছাগল চুরির অপবাদে যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুলাই ২০২০, ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ
বালাগঞ্জ প্রতিনিধি:
বালাগঞ্জে ছাগল চুরির অপবাদে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেঁধে আগুনে কাঁচি গরম করে গোপনাঙ্গে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, রবিবার (২৬ জুলাই) সকালের দিকে উপজেলার পশ্চিম গৌরিপুর ইউনিয়নের আজিজ পুর গ্রামের মৃত মুহিবুর রহমানের ছেলে শরিফ মিয়া (২৪) ও কামরুল মিয়া (২২), পার্শ্ববর্তী দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের বশির পুর গ্রামের মৃত আলম এর ছেলে মোঃ ফয়েজ মিয়াকে (৩০) কে তালতলা বাজার থেকে জরুরী কাজের কথা বলে তাদের বাড়িতে নিয়ে দরজা বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে মারধর করে এবং লোহার কাঁচি আগুনে পুড়ে গোপনাঙ্গ সহ শরীরের একাধিক স্থানে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। নির্মম এই নির্যাতনের একপর্যায়ে ফয়েজ মিয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে মৃত ভেবে ঘরের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায় তারা।
খবর পেয়ে নির্যাতিত ব্যক্তির পরিচিত মীর শানুর মিয়া, খন্দকার বোরু মিয়া, সিতার আলী, নজির মিয়া সহ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। এসময় দেওয়ান বাজার ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য খন্দকার আব্দুর রকিবও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাত্ক্ষনাত তাকে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়, সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী আতাউর রহমানের নির্দেশে পুলিশের একটি দল এসে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এব্যাপারে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ফয়েজ এর সাথে থাকা তার মা দিলারা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন আমার ছেলেকে তারা হত্যা করতে চেয়েছিল, আমার ছেলে গরু- ছাগলের ব্যবসা করে আসছে। তাকে ওরা মিথ্যা চুরির অভিযোগ তুলে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার সময় আমার ছেলের সাথে থাকা নগদ তেইশ হাজার টাকাও তারা নিয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, এখনো তার ছেলের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। এব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায় ছাগল চুরির মিথ্যা অভিযোগে’ নিরীহ ফয়েজের ওপর অমানবিক নির্যাতনকারী দের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এবং এই অমানবিক ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার গাজী আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান মামলা দায়ের পক্রিয়া চলছে।