দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে দুই হাজার মুরগীসহ পুড়লো জুড়ীর সেই বন্ধু পোল্ট্রি ফার্ম
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২০, ৩:৫৮ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে সোমবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে প্রায় দুই হাজার লেয়ার মুরগীসহ বন্ধু পোল্ট্রি ফার্ম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনাটি উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে ঘটেছে।
গত ১ মে রাত সাড়ে ৯টায় জুড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এ লেয়ার মুরগীর খামারে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেছিল। এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রলায় থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পদ থেকে অপসারণের জন্য সিলেট বিভাগীয় কমিশনারকে পুনরায় তদন্তের জন্য মন্ত্রনালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়। এমন সময়ে বন্ধু পোল্ট্রি ফার্মের এ আকস্মিক অগ্নিকান্ড নিয়ে এলাকায় নানা সমালোচনা চলছে। এলাকাবাসী ও ফার্মেও মালিকের দাবি এটি পরিকল্পিত অগ্নিকান্ড।
ঘটনার খবর পেয়ে কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওছার দস্তগীর ও জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
‘বন্ধু পোল্ট্রি ফার্ম’-এর মালিক দীনবন্ধু সেন ও তাঁর ব্যবসায়ীক অংশীদার মো. শাহজাহান অভিযোগ করেন, রাত তিনটার দিকে খবর পেয়ে বাড়ী থেকে ফার্মে এসে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। সাথে সাথে আমরা থানায় ফোন করি। পুলিশ এসে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভায়। তারা বলেন, আমাদের খামারে ২৫৫০টি মুরগী ছিল। মাস খানেক থেকে মুরগী ডিম দিচ্ছে।
খামারের প্রতিবেশি রাধাকান্ত দাস ও মঈন উদ্দিনসহ একটি পক্ষ দীর্ঘদিন থেকে খামার বন্ধের জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। গত ১ মে রাত জুড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের লেয়ার মুরগীর খামারে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে। তখন প্রায় ৫শ মুরগী মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করলেও কোন আসামী ধরা পড়েনি। এই চক্র গত ২৪ মে রাতে খামারের পিছনের দিকে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। এরাই আজ খামারে আগুন দেয়। এতে প্রায় দুই হাজার মুরগীসহ খামার পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খামারের নিকটবর্তী গুদাম ঘরেও আগুন লাগানো হয়। আমরা ৫ জন অংশীদার ৪০ লাখ টাকা ব্যাংক লোন নিয়ে খামারটি গড়ে তুলি। এখন সব হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, মামলার আসামীদের ধরতে প্রতিদিন অভিযান করলেও আসামীরা পলাতক থাকায় ধরা পড়ছে না। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওছার দস্তগীর বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।