চলে না অ্যাম্বুলেন্স, নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এক্স-রে
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মে ২০২০, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো জানুয়ারি মাসে একটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু চালক না থাকায় আধুনিক এই অ্যাম্বুলেন্সটি একদিনের জন্যও কাজে আসেনি। একইভাবে ২০০৫ সালে একটি এক্সরে যন্ত্র দেওয়া হয়। কিন্তু টানা বাক্সবন্দি থেকে এটিও এখন পুরোপুরি অচল যন্ত্রে পরিণত হয়ে আছে। উপজেলাবাসীর আশঙ্কা অ্যাম্বুলেন্সটিও এভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে নষ্ট হবে না তো?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে জেলা শহরে যাতায়াতে উন্নত সড়কযোগাযোগ থাকলেও উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক। অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে প্রধান ও দ্রুততম মাধ্যম বর্ষায় নৌকা আর হেমন্তে মোটরসাইকেল। উপজেলায় সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে আর কোনো অ্যাম্বুলেন্স সেবা নেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই অ্যাম্বুলেন্সটি চলাচলের জন্য সচল থাকলে তাহিরপুর উপজেলার লোকজন ছাড়াও ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও বিশম্ভরপুর উপজেলার একাংশের লোকজনের জঠিল রোগী পরিবহনে কাজে আসবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে করে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের বৃহদাংশের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়। কিন্তু লোকজন তাদের প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করতে গিয়ে জানতে পারেন চালক নেই, তাই অ্যাম্বুলেন্স সেবাও নেই। একইভাবে ২০০৫ সালে একটি এক্স-রে যন্ত্র দেওয়া হলেও সেটিও বর্তমানে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো জিপগাড়ি না থাকলেও এজন্য একজন চালক আছেন। জিপগাড়ির চালক প্রেষণে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। যদিও চালকের বেতন ভাতা তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেই হচ্ছে।
ধর্মপাশা উপজেলার দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ বলেন, হেমন্তে ক্ষেতের আইল পথ মাড়িয়ে আর বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ি দিয়ে আমরা তাহিরপুরে উপজেলা সদরে আসি। উপজেলা সদরে জঠিল ও প্রসুতি সেবা কার্যক্রম সুবিধা সীমিত। অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা না থাকায় এসব জঠিল ও প্রসুতি রোগী নিয়ে জেলা ও বিভাগীয় শহরে যাতায়াতে আমাদেরকে সিএনজি ব্যবহার করতে হয়।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আক্তার খানম বলেন, ১৫ বছর আগে এক্সরে যন্ত্র আসলেও একদিনের জন্যও কাজে লাগেনি উপজেলাবাসীর। এখন আধুনিক এই অ্যাম্বুলেন্সও যদি চালকের কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকে তবে তা হবে চরম দুঃখজনক।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ইকবাল হোসেন বলেন, চালক দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত পাঠিয়েছি। উপজেলা সমন্বয় সভায়ও বিষয়টি উত্থাপন করেছি। আশা করছি দ্রুতই চালক পাব। এক্স-রে নষ্ট হওয়ার সত্যতাও স্বীকার করে বলেন, নতুন এক্স-রে যন্ত্রের বরাদ্দের জন্যও কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।