শাবিপ্রবিতে অনলাইন ক্লাস বর্জনের ঘোষণা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মে ২০২০, ৭:২৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অনলাইন ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহির চৌধুরী, মেহনাজ মৌমিতা ও মীর সাব্বির আহমেদ চৌধুরী সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের এ ক্রান্তিকাল মুহূর্তে সম্যক (২০১৬-১৭) ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সকল বিভাগের সকল অনলাইন ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন। ব্যাচের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থায় শিক্ষার গুণমান ডিজিটাল অ্যাকসেস ও মানের ওপর নির্ভরশীল। তবে বর্তমান সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান করছেন। এসব অঞ্চলে ইন্টারনেট অ্যাকসেস এর সমান সুযোগ সুবিধা না থাকায় এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ফলে আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল ডিভাইস ও ডাটা প্ল্যানের ব্যয় মেটাতে না পেরে ক্লাস করতে পারছেন না ।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, বর্তমানে সব ব্যাচে ৩০-১০০ জন শিক্ষার্থী ক্লাস করে থাকেন। এতজন শিক্ষার্থী একসাথে অনলাইনে ক্লাস করলে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মতামত আদান-প্রদান অসম্ভব হয়ে দাড়ায়। এ ছাড়া অনেক শিক্ষক আছেন যারা ক্লাস রেকর্ড আপলোড দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোন প্রশ্ন থাকলে তা করার সুযোগ থাকছে না।
এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, অনেক শিক্ষকই আছেন যারা অনালাইনে ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না। তাদের জন্য হঠাৎ করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া বড় একটি চ্যালেঞ্জ। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর শিক্ষকদের লিখে বুঝিয়ে দেওয়ার মতো টুল থাকলেও পূর্ব প্রশিক্ষণ না থাকার দরূণ অনেক শিক্ষকের পক্ষে অনলাইন ক্লাসে এসব টুল ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে তারা শুধু অনলাইন ক্লাসে বই, অথবা স্লাইড দেখে যা পড়েন, শিক্ষার্থীদের তাই শুনতে হয়।
এ ছাড়া মহামারীতে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, অনেকে মারা যাচ্ছে। এর মাঝে আমাদের নিজেদের পরিচিত মানুষ, প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরাও আছেন। প্রতিদিন এ ধরনের খবর আমাদেরকে মানসিকভাবে দুর্বল করে ফেলছে। আমরা সবাই নিজেদের ও নিজেদের পরিবারকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছি। এমন অবস্থায় অনলাইনে ক্লাস করা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও হুমকির মুখে ফেলবে বলে আমরা মনে করি।