ওসমানীনগরে খুন: ধন মেম্বারকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের, গ্রেফতার ৮
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মে ২০২০, ৫:২৬ অপরাহ্ণ
আসামিরা নিজেদের বাড়ি ঘর লুটপাট করে বাদি পক্ষকে ফাঁসানোর অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের ওসমানীনগরের পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির ঈশাগ্রাই গ্রামে প্রতিপক্ষের ছুলফির আঘাতে শিপন মিয়া নামের যুবক খুন হবার ঘটনার মূল নায়ক ঈশাগ্রাই গ্রামের মৃত দরছ উল্যার ছেলে ধন মেম্বারকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিহত শিপনের বড় ভাই রিপন মিয়া বাদি হয়ে ধন মেম্বার সহ ২৭জনকে আসামি করে ওসমানীনগর থানায় হত্যা (মামলা নং-০২) দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় এজাহারভূক্ত ৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ঈশাগ্রাই গ্রামের মৃত রহিম উল্লার ছেলে আলা মিয়া(৬০), একই গ্রামের তার ভাই আব্দুল হেকিম(৭৫), মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে শফিক মিয়া(৫০), শফিক মিয়ার ছেলে আব্দুল কাইয়ুম(১৮), আব্দুল শহিদ(২৫), মৃত গেদা মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া(৩৫) এবং উমরপুর ইউপির লামা ইসবপুর গ্রামের মৃত ছানা মিয়ার ছেলে জুবায়ের আহমদ।
গ্রেফতারকৃতদের আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত শিপনের লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে পুলিশ। আজ রাত সাড়ে ৭টায় ঈশাগ্রাই গ্রামের নিজ বাড়িতে নামাজে জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে শিপনের লাশ দাফন করা হবে।
এদিকে শিপন হত্যা মামলার বাদি নিহত শিপনের বড় ভাই পুলিশের নিকট অভিযোগ করেছেন, আসামি পক্ষের লোকজনরা বিশেষ করে আসামি পক্ষের মহিলারা তাদের বসত ঘরের জিনিসপত্র পিকআপ ভ্যান দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বসতঘরের চালা সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিজেরা ভাংচুর করে বাদি পক্ষের উপর সাজানো লুটপাটের মামলা করার পায়তারা করছে।
মামলার বাদি নিহত শিপনের বড় ভাই রিপন মিয়া বলেন, ধন মেম্বার আমার ভাইকে খুন করল এখন উল্টো তাদের লোকজন নিজেদের বাড়ি ঘর ভাংচুর করে আমাদের উপর সাজানো লুটপাটের মামলা করার চেষ্টা করছে। এ ঘটনাটি আমি ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদ মোবারক, আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন গেদাই ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষকে অবহিত করে দেখিয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে এসে আসামি পক্ষের মহিলাদের কর্মকান্ড ছবি ও ভিডিও করে গেছেন।
পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ এ মতিন গেদাই বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে আমি নিজে গিয়ে দেখেছি আসামি পক্ষের লোকজন তাদের নিজের মালপত্র নিয়ে যাচ্ছে। তারা আমাকে জানিয়েছে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে তারা তাদের মালপত্র নিয়ে যাচ্ছে, আমিও আসামি পক্ষের মহিলাদের বলেছি তোমাদের নিরাপত্তা পাবে সেখানেই মালপত্র নিয়ে যাও।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদ মোবারক বলেন, ঈশাগ্রাই গ্রামে শিপন হত্যার ঘটনায় তার ভাই রিপন মিয়া বাদি হয়ে ধন মেম্বারকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামি পক্ষের লোকজন তাদের বাড়ির মালামাল নিয়ে যাওয়া ও ভাংচুর করে বাদি পক্ষকে লুটপাটের মামলা দিয়ে ফাঁসানোর পায়তারা করছে বলে মামলার বাদি রিপন মিয়া আমাকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন। হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৮ আসামিকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ধন মেম্বার সহ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।