অসহায় কৃষককে নিয়ে তামাশা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ এপ্রিল ২০২০, ৩:৪৫ অপরাহ্ণ
রুদ্র মিজান:
পায়ে বাবু মার্কা জুতা। হাতে গ্লাভস। কাস্তেটাও ঠিকমতো ধরতে পারেন না। আপনি কাস্তে নিয়ে দাঁড়ালেন আর চার-পাঁচজন দাঁড়ালো আপনার সামনে। তাদের কাজ আপনার মহান কর্মের ছবি ও ভিডিওচিত্র ধারণ করা। ঘটনা এমনও ঘটলো এক এমপিকে ভিডিও চিত্রে দেখলাম কাঁঁচা ধানই কেটে ফেলছেন। ছবি তোলতে গিয়ে, ছবি আর ফেসবুক কেন্দ্রিক রাজনীতি করতে গিয়ে অন্যের কাঁচা ধান নষ্ট করে দিলেন।
সবকিছুতেই তামাশা ভালো না। জীবন নিয়ে, ওষুধ নিয়ে, খাদ্য নিয়ে, কৃষকের বেঁচে থাকার অবলম্বন ধান নিয়ে তামাশা সহ্য করা যায় না। কৃষককে নষ্ট রাজনীতির উপকরণ না বানিয়ে তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করুন। এ নিয়ে সংসদে কথা বলুন। তা না করে করছেন নোংরা রাজনীতি। কৃষককে নিয়ে এসব তামাশা করলে আমার ভিষণ জ্বলে। হাওরের ছেলে। জন্মসূত্রেই কৃষক পরিবারের সন্তান। যদিও আমার পিতা একজন সৈনিক, পাশাপাশি একজন কৃষকও। কৃষক আমার বাপ, চাচা, ভাই। আমি কৃষকের সন্তান। কৃষককে নিয়ে তামাশা করবেন না প্লিজ। আপনাদের মতো গুটি কয়েক জনের কারণে যারা সত্যিকার অর্থেই কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে, শ্রমিকের অভাবে স্বেচ্ছা শ্রমে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে তাদের শ্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে না।
হাওরের দেশ সুনামগঞ্জ। অন্যান্য বছর দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে শ্রমিকরা সুনামগঞ্জে গিয়ে ধান কাটতেন। প্রাণঘাতি করোনা প্রতিরোধের জন্য দেশব্যাপি চলছে লকডাউন। করোনার কারণে এবার এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে শ্রমিকরা যাতায়াত করতে পারছেন না। যে কারণে বিপাকে রয়েছে বৃহত্তর এই হাওর অঞ্চলের কৃষকরা। তাছাড়াও রয়েছে অকাল বন্যার শঙ্কা। ঠিক এই সময়ে কৃষককে নিয়ে আপনাদের তামাশাকে আমি ঘৃণা করি। আর স্যালুট জানাই সেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যসহ যারা সত্যিকার অর্থেই কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
(লেখকের ফেসবুক থেকে নেয়া)