মৌলভীবাজারে এখনও মানুষের বেপরোয়া চলাফেরা : ঘটতে পারে ভয়াবহ সংক্রমণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ এপ্রিল ২০২০, ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করে মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানানোর পরও মানুষের মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা। বাজারে লোকজন সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলাতো দূরের কথা বরং স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলাফেরা করছেন। কোথাও চায়ের দোকানে বসে এখনও আড্ডা দিতে দেখা যাচ্ছে। তাদের হাবভাব দেখে মনে হয় প্রশাসনের কাজ তারা করছে, করুক, আমরা চলবো আমাদের মতো করেই। এসব দেখে মনে হচ্ছে সকল দায় দায়িত্বই যেন প্রশাসনের।
মৌলভীবাজারের জেলা সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ,বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলায় প্রতিদিনই সংক্রামক রোগ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সিভিল প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা, অভিযান, জরিমানা করা হলেও মানুষের মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা। নানা অজুহাতে কারণে-অকারণে ঘোরাফেরা করছেন সব বয়সের লোকজন। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল ও প্রশাসন।
গত বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ও জনসাধারণের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৩টি মামলায় প্রায় ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করে।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে মৌলভীবাজার জেলার সাতটি উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ মানুষকে সচেতন করতে প্রতিদিনই প্রচারণা চালাচ্ছেন। জেলার পুলিশ ও তথ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। তার সাথে সাথে মানুষকে ঘরে থাকার ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বুঝানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষকে কোনোভাবেই ঘরে রাখা যাচ্ছে না। বরং তারা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অকারণে বাইরে ঘুরছেন। কোথাওবা অনেকজন বসে আড্ডা দিচ্ছেন,আবার যুবকরা খেলাধুলা করছেন।
বৃহস্পতিবার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে ও জণগণের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ যৌথভাবে পৌরশহরের উত্তরবাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে অকারণে ঘোরাঘুরি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় ১৩টি মামলা করা হয়। জরিমানা করা হয় প্রায় ১৮ হাজার টাকা।
জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন জানান, করোনা ভাইরাসের মহামারি রোধে মানুষকে সচেতন করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রচারণা প্রতিদিনই চালিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া জনসচেতনতা সৃস্টি করতে প্রতিদিন বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন চায় মানুষজন ঘরে নিরাপদে থাকুক। কিন্তু লোকজন সেসব কিছুই বুঝতে চাইছেন না। কিছু মানুষের অসচেতনতার কারণে কি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে তা বর্হিবিশে^র দিকে তাকালে বুঝতে পারবে। লোকজনের অবাধ ঘোরাফেরা বন্ধ না করলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।