শমশেরনগরে মধ্যবিত্তদের সহায়তায় ইউপি সদস্যের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ এপ্রিল ২০২০, ৭:৪৪ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে যানবাহন চলাচল বন্ধ, দোকানপাট বন্ধ ও লোক সমাগম নিয়ন্ত্রণ করায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে খেটে খাওয়া মানুষজন, দিন মজুর ও অসহায় দরিদ্র মানুষজন ঘরের বাহিরে বের হতে না পারায় দুর্ভোগের মাঝে পড়েন। বিক্ষিপ্তভাবে সরকারি, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে অসহায় দরিদ্র মানুষজনকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। এর মধ্যে বেশি অসহায় ছিলেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। তারা লজ্জায় ঘরের বাহির এসে লাইন ধরে খাদ্য সামগ্রী নিতে পারছেন না। আবার কারো কাছে সাহায্যর কথা মুখ খুলে বলতেও পারছেন না। ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করে কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়নের বাজার ওয়ার্ডের সদস্য এমনি ১০০ মধ্যবিত্ত পরিবারের তালিকা করে বাসায় বাসায় গিয়ে রাতে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিলেন।
শমশেরনগর ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের সময় গত ১ এপ্রিল থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি তার সহযোগী লিয়াকত আলী, মোকরামিন চৌধুরী, তামজিদ রাজু, তার দুই ছেলেসহ কয়েকজনকে নিয়ে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ২১৫ জন দরিদ্র অসহায়দের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এসময় তিনি উপলব্দি করেছেন দুর্ভোগের শিকার হয়েও কোন মধ্যবিত্ত পরিবার সদস্যরা ঘরের বাহিরে এসে খাদ্য সামগ্রী নিচ্ছেন না। তাই তিনি তার ওয়ার্ডেও অসহায় মধ্যবিত্ত ১০০ পরিবার চিহ্নিত করে রোববার রাতে পরিবার প্রতি ৩ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি লবন ও আধা লিটার ভোজ্য তেল মিলিয়ে প্যাকেট করে রাতেই তাদের বাসায় পৌছে দিয়েছেন। প্রয়োজনে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বন্ধু বান্ধবদের সহায়তা নিয়ে দরিদ্র মানুষজনের সাথে সাথে আরও কিছু সংখ্যক মধ্যবিত্ত পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্যবিত্ত পরিবারের দুইজন সদস্য এ প্রতিনিধিকে বলেন, বাহিরে বের হয়ে কোন কাজ করতেও পারছেন না। আবার ঘরে খাবারও নাই। এমন সময় ইউপি সদস্যেও এ উদ্যোগ তাদের জন্য বেশ বড় সহায়তা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, তিনি মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে রাতে বাসায় বাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। কেউ মুখ খুলে সাহায্যের কথা না বললেও তিনি খোঁজ খবর নিয়ে মধ্যবিত্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আরো বলেন, যদি কোন মধ্যবিত্ত বা নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার খাদ্য সংকট মনে করে তাহলে সরাসরি তাকে ফোন করলেই তিনি বাসায় খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়ে দিবেন। তিনি এমন মহাদুর্যোগের সময় সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।