শেষ হলো সময়সীমা, কমলগঞ্জে আমন ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ৮:১৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের দুটি খাদ্যগুদামে আমন ধান সংগ্রহের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯৪৪ টন। কিন্তু টার্গেটের চেয়ে ৩৮০ টন কমিয়ে এনে আমন ধান সংগ্রহ সমাপ্ত করা হয়েছে। এতে করে অনেক কৃষক গুদামে শেষ মুহুর্তে ধান বিক্রি করতে পারিনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
টার্গেট পূরণ না করায় কার্যত ব্যর্থ হয়েছে ধান সংগ্রহ অভিযান। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণ হিসাবে কৃষকদের তালিকায় অনিয়ম, কৃষকদের অনাগ্রহ,বাজারের ধানের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলায় চলতি আমন ধান সংগ্রহ অভিযানের জন্য ভানুগাছ খাদ্য গুদামে ৯৭২ মে.টন ও শমসেরনগর খাদ্য গুদামে ৯৭২ মে.টন ধান সংগ্রহের জন্য বরাদ্দ করা হয়। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত তালিকাভুক্ত প্রকৃত কৃষকদের কাছ হতে প্রতি কেজি আমন ২৬ টাকায় সংগ্রহের জন্য নিদের্শনা দেওয়া হয়।
গত ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। তারপর হতে দুটি গুদামে ধান সংগ্রহ শুরু হয়। কিন্তু ধান সংগ্রহের তালিকার কৃষকরা ধান বাজারে বিক্রি করায় এবং প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে ধান ব্যবসায়ী, প্রবাসীদের নাম তালিকায় থাকায় শুরুতেই ধান সংগ্রহে বাধাগ্রস্ত হয়। একপর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের শংকায় পড়ে।
এ অবস্থায় ১৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের চিঠির আলোকে ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপজেলা ধান সংগ্রহ ওপর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় আড়াই মাসে মাত্র ৫৮ ভাগ ধান সংগ্রহ হওয়ায় কমিটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়ায় ২৮ তারিখ পর্যন্ত ১৯৪৪ টন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব না হওয়ায় ভানুগাছ খাদ্য গুদামে ৯৭২ টনের বরাদ্ধ থেকে ৭৯৪ টন কমিয়ে ১৭৮ টন ও শমসেরনগর খাদ্য গুদামের ৯৭২ টন বরাদ্ধ থেকে ২০২ টন কমিয়ে ৭৭০টনে নির্ধারণ করা হয়। মোট ১৯৪৪ টন হতে ৩৮০ টন কম সংগ্রহ করার সিদ্ধান্তে শেষ মুহুর্তে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অনেক কৃষক ভানুগাছ খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করার সুযোগ পাননি। ধান নিয়ে ফেরত যেতে দেখা যায়। ধান বিক্রি করতে আসা কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বালিগাঁও দুলাল মিয়া বলেন, আমার নাম তালিকায় আছে। কিন্তু খাদ্যগুদাম ধান রাখছে না, বলছে ধান সংগ্রহ শেষ। তার মতো তালিকায় থাকা অনেক কৃষক বিমুখ হয়ে ফিরে যান।
শমসেরনগর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাকির আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, আমার গুদামে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। শুক্রবার সকালে ৭৭০টন ধান ক্রয় শেষ হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কমর্কর্তা দিপক চন্দ্র বলেন, নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শংকায় মন্ত্রনালয়ের চিঠির আলোকে ৩৮০টন কম সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা ধান সংগ্রহ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, আশানুরুপ আমন ধান সংগ্রহ কার্যক্রম মন্তরগতি হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের সবর্শেষ চিঠির আলোকে বরাদ্ধ কমিয়ে দ্বিতীয় দফা লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়।