লিবিয়ায় সিলেটের যুবককে জিম্মি করে টাকা দাবী ও হত্যার হুমকি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ৮:৩৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
আদম ব্যবসার নামে মানবপাচার শ্রম শোষণ ও আটক রেখে মুক্তিপণ আদায়ের ব্যবসায় জড়িত আন্তঃদেশীয় মানব পাচারকারী সিলেটের আলী আহমদ ও স্বত্ত্বাধিকারী এ.এ. এন্টারপ্রাইজ পুরানা পল্টন ও দুদু মিয়া। আন্তঃদেশীয় মানব পাচারকারী চক্রের মুলহুতা দেশে থেকে ওয়ার্ক পারমিট পাটানোর নামে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে টাকা দাবী টাকা দিতে না পারলে খুন করার হুমকি প্রদান করে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, সিলেটের বিয়ানীবাজার খানার খশিরনামনগর গ্রামের আলীনুর এর স্ত্রী জাহানারা বেগম ১ জানুয়ারি সিলেট জজকোর্টে মানব পাচার দমন ট্রাইবুন্যালে বাদী হন। আন্তঃ দেশীয় মানব পাচারকারী সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার লাংলাকোনা গ্রামের চুনু মিয়ার ছেলে আলী আহমদ ও স্বাত্ত্বাধীকারি এ এ এন্টার প্রাইজের পুরানা পল্টন ঢাকার ওদুদ মিয়ার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ে করেন।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, জাহানারা বেগমের এর দেবর নরুল হক (৩৪) কে লিবিয়ায় পাটানোর জন্য পাশের গ্রামের আলী আহমদের সাথে চুক্তি হয়। ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় দালাল আলী আহমদ ঢাকার ট্রাভেলস ব্যবসায়ী ওদুদ মিয়ার মাধ্যমে আলী আহমদ জাহানারা বেগমের দেবরকে লিবিয়ায় পাটাবে। জাহানার বেগম আলী আহমদের কথা বিশ্বাস করে ঢাকার এ এ এন্টার প্রাইজ নামীয় ট্রাভেলসে গিয়ে কথাবার্তা চুড়ান্ত হওয়ায় পর নুরুল হক লিবিয়ায় পাঠানোর জন্য ভারতের ভিসা সংগ্রহ করানো হয়।
গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা হতে আলী আহমদ নুরুল হককে ভারতে নিয়ে যায়। ২৯ ডিসেম্বর একজন অজ্ঞাতনামা লোকের সাথে নুরুল হককে কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এয়ারপোর্ট হতে একটি ফ্লাইটে প্রথমে মুম্বাই পরে দুবাই সারজা হয়ে ৩১ ডিসেম্বর নুরুল হকতে লিবিয়ায় পৌছানো হয়। মানবপাচারকারী আলী আহমদ গত ১ জানুয়ারি জাহানার বেগমের নিকট হতে ২ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ও ২ জানুয়ারি আই. এফ. আই. সি ব্যাংক উপশহর শাখা মাধ্যমে একাউন্ট নং ১০২০১১৩৬৬৩০৮১১ দুই লক্ষ টাকা দেন। মোট ৩ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে দেন।
গত ২ জানুয়ারি রাত ৮ টায় সময় জাহানারা বেগমের দেবর নুরুল হক লিবিয়া থেকে ফোন করে জানায় ঢাকার এএ এন্টার প্রাইজের মালিক ওদুদ মিয়ার শ্যালক রিকি লিবিয়াতে তার সাথে দুর্ব্যবহার করছে মানব পাচারকারী আলী আহমদ ও ওদুদকে আরো ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য। ৩ জানুয়ারি রাত ৮টায় আবার ও ফোনে নুরুল হক জানায় আলী আহমদ ও ওদুদ মিয়ার নির্দেশে ওদুদ এর শ্যালক রকি তাহাকে লিবিয়ায় একটি অন্ধকার ঘরে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে টাকা না দিলে খুন করার হুমকি দেয়।
৭ জানুয়ারি আবার ও নুরুল হক কান্নাজড়িত কন্ঠে ফোন করে জানায় তার ভাবীকে তাহাকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করা হয়। বাংলাদেশে আলী আহমদ ও ওদুদকে ৩ লক্ষ টাকা না দিলে তাকে খুন করে লাশ গুম করা হবে। এ খবর পাওয়ার পর জাহানারা বেগম বাংলাদেশে দুই মানব পাচারকারী আলী আহমদ ও ওদুদ এর সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায় আরো ৩ লক্ষ টাকা না দিলে নুরুলকে লিবিয়ায় খুন করা হবে। এ দায় দায়িত্ব তারা নিতে পারবে না।
আসামীপক্ষ সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য তারা পরস্পর যোগসাজশে এবং তাদের ভিন দেশীয় সহযোগিতার সক্রিয় সহায়তায় নুরুলকে দিয়ে জবরদস্তিমূলক শ্রমশোষণ করার জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাকে লিবিয়ায় পাচার করেন। তাকে আটক রাখিয়া অমানুষিক নির্যাতন লিপীড়নের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের চেষ্টা করছেন।