ভারতে ‘পদ্মভূষণ’ পেলেন প্রয়াত সিলেটের ছেলে সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘পদ্মভূষণ’ পেলেন প্রয়াত বাংলাদেশি কূটনীতিবিদ সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। আর দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘পদ্মশ্রী’ পেলেন বাংলাদেশি প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক।
শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিন শাখায় এ বছর পদ্ম পদক প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মশ্রী’ প্রাপ্ত হিসেবে মোট ১৪১ জনের নাম ঘোষণা করেছে তারা। ৭ জন ‘পদ্মবিভূষণ’, ১৬ জন ‘পদ্মভূষণ’ এবং ১১৮ জন ‘পদ্মশ্রী’ পদক পাবেন। এর মধ্যে ‘পদ্মভূষণ’-এ ভূষিত হয়েছেন মোয়াজ্জেম আলী। আর ‘পদ্মশ্রী’তে এনামুল হক।
মোয়াজ্জেম আলী ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। দেশের জন্মলগ্ন থেকে কূটনীতিক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখানকার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ২০১৪ সাল থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন পেশাদার এ কূটনীতিক। দায়িত্ব ছেড়ে দেশে ফেরার কয়েক দিনের মাথায় গেল ৩০ ডিসেম্বর মারা যান তিনি।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর বড় ভাই এসএম সৈয়দ মোহাম্মদ আলী ছিলেন ডেইলি স্টারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। তিনি প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাতিজা।
২০০১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান মোয়াজ্জেম আলী। তখন তিনি পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে কূটনীতিক হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে কর্মরত ছিলেন। সে সময় ৪ আগস্ট তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন জানান এবং স্বাধীন বাংলাদেশের আলাদা দূতাবাস খোলেন।
২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পেতে মোয়াজ্জেম আলীর ভূমিকা ছিল। রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিনি ভুটান, ইরান ও ফ্রান্সে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ওয়াশিংটন, ওয়ারশ, জেদ্দা ও দিল্লিতে বাংলাদেশ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন।
মোয়াজ্জেম আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এমএসসি পাস করেন।
এছাড়া, ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘পদ্মশ্রী’ পেয়েছেন বাংলাদেশি প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক।
বিস্মৃতপ্রায় ঢাকা জাদুঘরকে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তর করেন এনামুল হক। জাদুঘর আন্দোলনের পথিকৃৎ তিনিই। আহসান মঞ্জিলকে জাদুঘরে পরিণত করার মূল উদ্যোক্তাও এ প্রত্নতত্ত্ববিদ। পাশাপাশি গীতিনাট্য রচনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিবছরের মতো এবারো মার্চ-এপ্রিলে রাষ্ট্রপতি ভবনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মনোনীতদের হাতে পদক তুলে দেয়া হবে।