ধর্মপাশায় অবৈধ বেকারিতে নোংরা পরিবেশ, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে জনগণ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ৯:০৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চল খ্যাত গোলকপুর বাজারে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই নোংরা পরিবেশে একটি বেকারি কারখানায় খাবার উৎপাদন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ভোক্তা অধিকার আইন থাকলেও মা বেকারি নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি তা মানছে না।
সরেজমিন উপজেলার গোলকপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, একটি পরিত্যক্ত ঘরে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে বিস্কুট, টোস্ট, রুটি, কেকসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী। আর এসব খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর উপাদান, কাপড়ের রং, ক্যামিকেল, সোডা, মেয়াদোত্তীর্ণ ময়দা ও ময়লা মিশ্রিত চিনি। খাবার তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে নোংরা ময়লাযুক্ত অস্বাস্থ্যকর আসবাবপত্র।
এ সময় খাদ্যসামগ্রী তৈরির আসবাবপত্র রক্ষিত ঘরে কয়েকটি কুকুর আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে। ঘরের চালের নিচে মাকড়সার জাল ঝুলছে।
মা বেকারির মালিক টিপু সুলতানকে পাওয়া যায়নি। তবে ওই বেকারির কারিগর আবুতাহের জানান, বিভিন্ন রকমের রং ও ক্যামিকেল ছাড়া খাদ্যদ্রব্যের ধরন সুন্দর হয় না এবং সোডা ব্যবহার ছাড়া খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা সম্ভব না।
নোংরা পরিবেশে খাদ্য সামগ্রী তৈরি করার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা বেতনভূক্ত কর্মচারী। আমরা মালিকের নির্দেশে কাজ করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের একাধিক ব্যাবসায়ী জানান, উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টরকে ম্যানেজ করেই এখানে নোংরা পরিবেশে অবৈধভাবে বেকারির ব্যবসা করে আসছে টিপু সুলতান।
জানা গেছে, এ ধরণের ব্যবসা পরিচানার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে ট্রেড লাইসেন্স, সিভিল সার্জেন কর্তৃক প্রিমিসেস লাইমেন্স ও বিএসটিআই এর অনুমোদন ছাড়াই এখানে অবৈধভাবে এ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্যমান নিয়ন্ত্রণ তদারকির দায়িত্বে থাকা সেনেটারি ইন্সপেক্টর পিযুষ তালুকদার বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি ওই বেকারি থেকে কোনো প্রকার সুবিধা গ্রহণ করিনি। তবে নোংরা পরিবেশে খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন না করে ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য আইন মেনে এবং সিভিল সার্জন কর্তৃক প্রিমিসেস লাইসেন্স নবায়ণ করে খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করার জন্য ওই বেকারির মালিককে আমি বার বার তাগিদ দিয়ে আসলেও তিনি কর্ণপাত করেননি।
জানতে মা বেকারির মালিক টাপু সুলতানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবু তালেব বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।