সিলেটের সাবেক কাস্টমস কমিশনার ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের সাবেক কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক সিলেটের উপপরিচালক মো. নূর-ই-আলম বাদী হয়ে সোমবার মামলা দুটি করেন।
পৃথক দুটি মামলায় দুদকে তাদের দাখিল সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩৪ টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ গোপনের অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে শফিকুল ইসলামের ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা ও তার স্ত্রীর মাহবুবা ইসলামের গোপন সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬ হাজার ৫৮৪ টাকার।
মো. শফিকুল ইসলাম বর্তমানে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা-১ এ কমিশনার (আপিল) হিসেবে কর্মরত। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার তারাপাশার নিকলী ভবনের মো. নবী হোসেনের ছেলে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় শফিকুল ইসলামের ২০০০-২০০১ থেকে ২০১৭-১৮ করবর্ষ পর্যন্ত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা।
দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে শফিকুল ইসলাম ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। সম্পদ বিবরণী যাচাই করে দুদক শফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মো. সালেহ মুহতাসিম নাহিয়ান জিসানের নামে ৫২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের সন্ধান পায়।
এ ক্ষেত্রে তিনি ১৫ লাখ ৫১ হাজার টাকার সম্পদ গোপন করেন। সম্পদ বিরণীতে শফিকুল ইসলাম ৯৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৭ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব দেন, যা যাচাই করে দুদক তার ১ কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব পায়। এক্ষেত্রে তিনি ৫৬ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকার সম্পদ গোপন করেন।
মিথ্যা বিবরণ দিয়ে তিনি ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ২১৫ টাকার সম্পদ গোপন করেন। অপরদিকে শফিকুল ইসলামের দাখিল করা আয়কর রিটার্নে ২০০০-২০০১ থেকে ২০১৭-১৮ করবর্ষ পর্যন্ত সময়ে ১ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫৭ টাকার নিট সম্পদ আছে বলে উল্লেখ করেন।
এ সময়ে তিনি পারিবারিক খরচ বাবদ ৩২ লাখ ৭৩ হাজার হাজার ৫১৮ টাকা ব্যয় করেন বলে উল্লেখ করেন। এই সময়ে প্রাপ্ত সম্পদ ও খরচ মিলে তার সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৭৫ টাকার। এই সময়ে শফিকুল ইসলামের বৈধভাবে আয় করেন ১ কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ১২৫ টাকা। সে হিসাবে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকার।
শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দুদকে তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ১০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। সম্পদ বিবরণী যাচাই করে দুদক তার নামে ১ কোটি ৮১ লাখ ৩৩ হাজার ৭০৬ টাকার স্থাবর সম্পদের সন্ধান পায়।
এ ক্ষেত্রে তিনি ৮১ লাখ ২৩ হাজার ৭০৬ টাকার সম্পদ গোপন করেন। সম্পদ বিবরণীতে মাহবুবা ইসলাম ২ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ১১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব দেন, যা যাচাই করে দুদক তার ২ কোটি ৪১ লাখ ২ হাজার ৪১২ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব পায়। এক্ষেত্রে তিনি ১৫ লাখ ১৪ হাজার ২৯৩ টাকার সম্পদ গোপন করেন। মিথ্যা বিবরণ দিয়ে তিনি ৯৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৯ টাকার সম্পদ গোপন করেন।
অপরদিকে মাহবুবা ইসলামের দাখিল করা আয়কর রিটার্নে ২০০০-২০০১ থেকে ২০১৭-১৮ করবর্ষ পর্যন্ত সময়ে ৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৩ টাকার নিট সম্পদ আছে বলে উল্লেখ করেন। এ সময়ে তিনি পারিবারিক খরচ বাবদ ১৪ লাখ ৭ হাজার হাজার ১৫১ টাকা ব্যয় করেন বলে উল্লেখ করেন।
এ সময়ে প্রাপ্ত সম্পদ ও খরচ মিলে তার সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮৪ টাকার। এই সময়ে তিনি বৈধভাবে আয় করেন ৩১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। সে হিসাবে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬ হাজার ৫৮৪ টাকার।