বন্যায় সুনামগঞ্জে ৮৪৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ আগস্ট ২০১৯, ৪:১৩ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
চলতি বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলার রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একাধিক সড়কে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। জেলা ১১ টি উপজেলার সবকটি সড়কেই খানা-খন্দ তৈরি হয়েছে। প্রায় ৮৪৮ কিলোমিটার সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ২৫ লক্ষ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এই মুহুর্তে ভাঙ্গা রাস্তা মেরামতের কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়ন, রঙ্গারচর, সুরমা ইউনিয়নের বেশির ভাগ রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার রাস্তার বেহাল দশার কারণে যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এই সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে যাত্রী যেতে হয় গাড়ি থেকে নেমে। পড়ে ভাঙ্গা স্থান পার হয়ে আবার গাড়িতে ওঠতে হয়। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নবীনগর এলাকায় বাঁধ ভেঙে প্রায় তিনটি ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের সৃষ্টি হয়েছে বাধা। তাছাড়া পৌর শহরের কালিবাড়ি, জামাইপাড়া, উকিলপাড়া সুলতানপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ।
তাছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, দোয়াবাজারসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার সড়কের ঢালাই পানি ঢেউয়ে ভেসে গিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ এই সব সড়ক সংস্কারে উদাসীন ভূমিকা পালন করছেন। অজুহাত হিসেবে বলছেন বৃষ্টির কারণে তারা সড়কগুলো মেরামত করতে পারছেন না।
এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তথ্যমতে, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৬৬টি স্থানে প্রায় ১৮৪ কি.মি, শাল্লা উপজেলায় ২৩টি স্থানে ৪৫ কি.মি, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ৩০ টি স্থানে ৬০ কি.মি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ৪২ টি স্থানে ১২৬ কি.মি, দিরাই উপজেলার ৯ টি স্থানে ২৮ কি.মি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৫১ টি স্থানে ১৬৮ কি.মি, তাহিরপুর উপজেলায় ৩ টি স্থানে ১৬ কি.মি, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৬ টি স্থানে ৬ কি.মি, জগন্নাথপুর উপজেলায় ২০ টি স্থানে ৭৫ কি.মি, ধর্মপাশা উপজেলায় ১৫ টি স্থানে ৫০ কি.মি, ছাতক উপজেলায় ১০ টি স্থানে ৫৮ কিলোমিটার রাস্তা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার মোট ২৭৫ টি স্থানের ৮১৮ কিলোমিটার রাস্তায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া ১১ উপজেলায় প্রায় ৯৬ টি ব্রিজ ও কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে যার আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা।
অন্যদিকে জেলা সড়ক ও জনপথের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যায় প্রায় ৩০ কি.মি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃর্তৃপক্ষ। তাছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কেও ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকবাল আহমদ বলেন, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে আমাদের অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সেই সড়ক গুলো দ্রুত মেরামত করার চেষ্টা করছি।
জেলা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বন্যায় আমাদের সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কও রয়েছে। আনুমানিক হিসেবে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকা মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছি। বরাদ্ধ পেলেই কাজ শুরু হবে। জরুরী ভিত্তিতে চলাচলের জন্য ভাঙা স্থানে ইট ফেলে মেরামত করা হয়েছে।