সিলেটে কাঁচামরিচের ডাবল সেঞ্চুরি, ৫০টাকার নিচে মিলছে না কোন তরকারি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুলাই ২০১৯, ৩:৫১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সপ্তাহ-দশ দিন আগে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ এখন ডাবল সেঞ্চুরির কোটায় পৌছে ১৭০ থেকে ১৯০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতিকালের বন্যাকে পুজি করে হু হু করে বেড়ে চলছে নিত্যপণ্যের দাম।
নগরীর বাজারগুলোতে বেড়েছে কাঁচামরিচের ঝাল। সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম দ্বিগুনের বেশি বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা। একই সঙ্গে বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম।
উচ্চমূল্যের বাজারে একটু স্বস্তি দিয়েছে ডিম, পিঁয়াজ ও মাছ। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম কমেছে ডজনে ১৫ টাকা, আর পিঁয়াজের দাম কমেছে ৫ টাকা। দীর্ঘদিন পর কমেছে বেশিরভাগ মাছের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের দাম। তবে মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম ৫০-৫২ টাকা থেকে বেড়ে ৫৪ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে অনেক সবজির জমি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে হঠাৎ করে কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম এমন অস্বাভাবিক বেড়েছে বলে অভিমত ব্যবসায়ীদের। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, কার্যকরী বাজার তদারকি ব্যবস্থা না থাকায় হঠাৎ পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এতে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী লাভবান হলেও বেকায়দায় পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) নগরীর শিবগঞ্জ কিচেন মার্কেট, টিলাগড়, মিরাবাজার, ব্রক্ষময়ীবাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচমরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুনেরও বেশি হয়েছে। বাজারে ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়নি। তবে টমেটো, গাজর ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।
এদিকে কাঁচামরিচের দাম বাড়লেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। পাইকারি বাজারের দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৬০ টাকা।
এদিকে গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পিঁয়াজ কমে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কিছুটা নিম্নমানের দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৫০-৫২ টাকা। আমদানি করা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি। যা আগে বিক্রি হয়েছিল ২৪ থেকে ২৮ টাকা। এছাড়া আমদানিকৃত চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি আর দেশি ১৩০ টাকা কেজি।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শসা, টমেটো ও গাজর। বাজারভেদে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো ও গাজর। শসা, টমেটো ও গাজরের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। গত সপ্তাহের মতো করলা, কাঁকরোল, উস্তা, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা ঢেঁড়স; পেঁপে, পটল, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা; বেগুন, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা; আলু ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া বাজারে প্রতি আঁটি লাল শাক, মূলা শাক, কলমি শাক ২৫ টাকা; পুঁই শাক, লাউ শাক ৩০ টাকা; ধনে পাতা কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সবজির দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিবগঞ্জ সেনপাড়ার বাসিন্দা রাফি আহমদ বলেন, দেশে একটা কিছু হলে প্রথমে প্রভাব পড়ে বাজারে, বিশেষ করে সবজি বাজারে। এতে করে আমাদের মতো নিন্মআয়ের মানুষ বেকায়দায় পড়ে যায়। দেশে মাত্র হাতেগোনা কয়েকটা জেলায় বন্যা হয়েছে। সেখানে আবার তেমন কোনো সবজি হয় না। তাহলে সবজির দাম এতো বাড়ার কারণ কী? সরকার কি এটা কখনো তদারকি করে দেখেছে। পিঁয়াজের দামতো প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে বাড়ে, এবার অনেক আগেই বেড়েছে। এতে স্পষ্ট কেউ কোনো কারসাজি করছে। এতে করে একটি অসাধু ব্যবসায়ী মহল লাভবান হচ্ছে। সরকার বারবার বলছে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক হবে, কোথায় হচ্ছে বরং আরো অস্বাভাবিক হচ্ছে দিনদিন।
সুত্রঃ শ্যামল সিলেট