বালাগঞ্জে আকস্মিক বন্যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত, ১৩শ পরিবার পানিবন্দি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুলাই ২০১৯, ৯:৩৯ অপরাহ্ণ
রজত দাস ভুলন,বালাগঞ্জ:
বালাগঞ্জে আকস্মিক বন্যায় ৬ টি ইউনিয়ন প্লাবিত যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত। ৩০ হাজার লোক সহ ১৩শ পরিবার পানি বন্দি। উপজেলা প্রশাসন থেকে কন্টোল রুম খোলা হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মত বালাগঞ্জেও বন্যার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।এরফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দী হয়ে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে মানুষ ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে কুশিয়ারা নদীর তীরঘেঁষা বালাগঞ্জ সদরের স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের সম্মুখের রাস্তা, বাজারের ভেতরের রাস্তা, বালাগঞ্জ সরকারি ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ, তয়রুন নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতর, প্রবেশের রাস্তা ও মাঠ, উপজেলা প্রশাসনের মূল সড়ক ও উপজেলা প্রশাসনের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে এবং উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার অফিসগুলোর ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে পানিবাহীত নানা রোগ। যার ফলে বন্যাআক্রান্ত এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রভাব পড়েছে। পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান,কুশিয়ারা ডাইকের প্রায় পনের জায়গায় ভাঙ্গন দেখে দিয়েছে। যার প্রভাবে ১৩গ্রাম প্লাবিত হয়ে ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।
বালাগঞ্জ বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মোঃ জুনেদ মিয়া বলেন, বাজারের একাধিক স্থানে পানি উঠে যাওয়ায় ব্যবসায়িরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।প্রশাসনের পাশাপাশি বিত্তশালীরা বন্যার্তদের পাশে দাড়ানো আহবান জানান। বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও বোয়ালজুড় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনহার মিয়া বলেন উপজেলার সর্বত্র বন্যা দেখা দিয়েছে। ইউনিয়নের ছোটবড় কাচা রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে।আউশ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলা প্রকৌশলী এস আর এম জি কিবরিয়া বলেন, ছোট কাট রাস্তা ছাড়াও ফেঞ্চুগঞ্জ – বালাগঞ্জ রাস্তার ডাইকের বাজার ও খছরুপুর টু বালাগঞ্জ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর বলেন, শেরপুর থেকে বালাগঞ্জ বাজারের কুশিয়ারা ডাইকের ভাঙ্গনে হামছাপুর,জালালপুর, গালিমপুর গ্রামের বন্যা পতিরোধক বাধেঁর ভাটপাড়া, পৈলনপুর,ফাজিলপুর, পূর্ব ইছাপুর এ সকল স্থান ডাইকের বাধ ভেঙে পানি ভিতরে প্রবেশ করছে সেই সঙ্গে বালাগঞ্জের সাথে পূর্ব পৈলনপুরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। একি সাথে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে বালাগঞ্জ রোডের ডাইকের বাজার সংলগ্ন রাস্তা ফাটল দেখা দেয়ায় ঝুকিপূর্ন ভাবে গাড়ি চলাচল করছে। উপজেলার ৯টি প্রাইমারি ও ৪টি মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে ইতিমধ্যে গালিমপুর হাইস্কুল ও পূর্ব পৈলনপুর হাইস্কুলে বন্যার্ত মানুষজন আশ্রয় নিয়েছেন এবং পূর্ব গ্রৌরীপুর বি কে এম হাই স্কুলে মানুষ আসতে শুরু করেছেন। প্রশাসনিক ভাবে ৫টন চাল ও ১০০ প্যাকেটশুকনো খাবার হাতে এসে পৌছেছে। কন্টোল রুম খোলা হয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুস সাকিব জানান, সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা করা হয়েছে যাথে ত্রান সামগ্রী দূর্গত এলাকায় দূত পৌছানো যায় সেই সাথে বন্যা মোকাবেলায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। এদিকে গত ১৫ জুলাই উপজেলা সম্মেলন কক্ষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোস্তাকুর রহমান মফুরের সভাপতিত্বে ও প্রকল্প কর্মকর্তা প্রীতিভুষন দাসের পরিচালনায় উপজেলা ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠত হয়। সভায় অংশ নেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুস সাকিব সবকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যন ও কমিটির সদস্যবৃন্দ।