সুনামগঞ্জে পানিবন্দি দেড় লাখ পরিবার, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুলাই ২০১৯, ৯:২২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সুনামগঞ্জে ৬ দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে পাহাড়ি ঢল। হচ্ছে ভারি বৃষ্টিও। ফলে ইতোমধ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে জেলার ১১টি উপজেলা। সরকারি হিসেবে এসব উপজেলার ৭০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার পরিবার। তবে স্থানীয় লোকজনের মতো বন্যাদুর্গদের এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, সোমবার সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জের ষোলঘরে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮০ মিলিমিটার। ২১/২২ জুলাই পর্যন্ত পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকবে এবং এতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলেও জানা তিনি।
এদিকে, জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যায় বিশুদ্ধ পানি সংকট এবং পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার কৃষকরা। রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দি অবস্থায় সময় কাটছে দুর্গত লোকদের। কেউ কেউ উঠছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় সরকারি ১০টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি জেলার বন্যাশ্রয় কাম স্কুল হিসেবে নির্মিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ২৩৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। আরো তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনা ও যাতায়াতের রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেগুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যার কারণে দ্রব্যমূল্যও বেড়ে গেছে পুরো এলাকায়। বিশেষ করে পানিতে প্লাবিত হওয়ায় গ্রাম এলাকার অনেক হাট-বাজারও নিয়মিত বসছে না।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল হক বলেন, প্রথম পর্যায়ে বন্যাক্রান্ত ছয়টি উপজেলায় ৩ লাখ টাকা, ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানোর পর রোববার ১০ লাখ টাকা, ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো বন্যাকবলিত ১১ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টনের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানুর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের সব গ্রাম প্লাবিত। মানুষের বাড়িঘরে পানি। অনেক মানুষ রান্নাবান্না করতে পারছেন না। কৃষকরা গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। নিজেরা কোনভাবে ম্যানেজ করতে পারলেও গোখাদ্য নিয়ে সঙ্কটে তারা।’