সিলেটে উন্নয়নের নামে বর্ষা মৌসুমে খোঁড়াখুঁড়ি, জনদুর্ভোগ চরমে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুলাই ২০১৯, ১:৫৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
বর্ষা মৌসুমে সিলেট নগরীতে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ড্রেন ভাঙা-গড়া ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ হতে না হতেই ফের শুরু হয়েছে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি।
পুরনো ড্রেন ভেঙে নতুন ড্রেন নির্মাণকাজ, রাস্তার দেয়াল ভেঙে নতুন দেয়াল নির্মাণ ও বিদ্যুতের ভূগর্ভস্থ লাইন টানার জন্য নগরীর বিভিন্ন সড়কে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, দুর্ভোগে পড়ছেন ব্যবসায়ী ও পথচারীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী।
ভুক্তভোগীরা জানান, পুরনো ড্রেন ভেঙে ফেলায় ময়লা-আবর্জ্যনা, ময়লা পানি প্রবাহিত হচ্ছে মূল রাস্তার উপর দিয়ে। যদিও ইতোমধ্যে অধিকাংশ ড্রেনের কাজ শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু কোনো প্রকল্প শেষ না হওয়ার আগেই বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় একটু বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার।
এই ভোগান্তির ধকল সামলে উঠার আগেই বিদ্যুতের ভূগর্ভস্থ লাইন টানার জন্য নতুন করে রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। লাইনের জন্য রাস্তা খুঁড়ে সেই মাটি রাখা হচ্ছে সড়কের উপর। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও কাটাকাটির ফলে এমনিতেই রাস্তা সঙ্কুুচিত হয়েছে, তার উপর কাদা ও আবর্জনা জমে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
শিবগঞ্জ থেকে মিরাবাজার ও জিন্দাবাজার থেকে বারুতখানা পর্যন্ত সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও নতুন ড্রেনের নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত কাজের অর্ধেকও শেষ হয়নি। নগরীর বন্দরবাজার, জেল রোড, সোবহানীঘাট ও সোনারপাড়া এলাকার মূল রাস্তার পাশে ড্রেনের কাজের কারণে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
শিবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী সুমন মিয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নগরীর উন্নয়ন আমরা সকলে চাই কিন্তু জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে নয়। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের কাজ করতে হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের কেবল লাইন স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে নগরীর ইলেকট্রিক সাপ্লাই বিদ্যুতের সাব স্টেশন থেকে আম্বরখানা হয়ে চৌহাট্টা এবং সেখান থেকে জিন্দাবাজার, সিটি কর্পোরেশন, সার্কিট হাউজ পর্যন্ত একটি লাইন।
আবার চৌহাট্টা থেকে রিকাবীবাজার হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত আরেকটি লাইন টানার উদ্যোগ নেয়া হয়। ৫৫ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি বর্ষার মৌসুম শুরু হলে আবার এ প্রকল্পের কাজ আরম্ভ করা হয়।
সিসিক সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ শুরু হয় নগরীতে। এ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তা, ড্রেন-কালভার্ট ও রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে।
২০২১ সালের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। এডিবি, সিসিকের নিজস্ব তহবিল ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান এ প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের শুরুতে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের দুই পাশের মূল ড্রেন সম্প্রসারণের জন্য চার থেকে ছয় ফুট করে জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়।
রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি ও ড্রেন নির্মাণে জনদুর্ভোগ নিয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নগরবাসীর সাময়িক অসুবিধা হলেও দীর্ঘদিনের বিভিন্ন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে। নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে সাত কিলোমিটার ভূগর্ভস্থে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন নির্মাণের কাজসহ এসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।