ব্রিটিশ আমলের ফেঞ্চুগঞ্জ রেল সেতু এখন মৃত্যুফাঁদ !
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০১৯, ৫:২৪ অপরাহ্ণ
ফেঞ্চুগঞ্জ সংবাদদাতা:
কুশিয়ারা নদীর উপর দিয়ে ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা হয় ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারা রেলসেতু। শত বছরের অধিক আখাউড়া সেকশনের কুলাউড়া-সিলেট রেল লাইন চরম জীর্ণদশায় উপনীত হয়েছে। ওই সেকশনের কুশিয়ারা নদীর উপর ফেঞ্চুগঞ্জ রেল ব্রিজটিও বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপুর্ণ এই রেল সেতু দিয়ে বিপজ্জনক গতিতে ট্রেন চলাচল করছে। ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের উপর দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে আতঙ্ক ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সেতুর উভয় পার্শ্বে সতর্কতামূলক সর্বোচ্চ গতিবেগের সাইনবোর্ড থাকলেও গতি নিয়ন্ত্রণ না করার অভিযোগ আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর চালকদের বিরুদ্ধে। ৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতুর মধ্যভাগে সেফটি পিঞ্জিরা থাকলেও বাজারের উপরিভাগ ও অপর প্রান্তে কোনো সেফটি পিঞ্জিরা নেই। বাজারের বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হয়েছে সেতুর নিচ দিয়ে। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুতে কোনো ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হলে এর ভয়াবহতা অকল্পনীয় হবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
রেল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ওই সেতুর উপর দিয়ে আন্তঃনগর ও লোকাল ১৬টি ট্রেন চলাচল করে। সূত্রটি আরো জানায়, ২০০৯ সালে সেতুর পিলারে ফাটল দেখা দিলে ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ রেখে ওই সময় সেতুর পিলার মেরামত করা হয়। ওই বছরের ২৬শে অক্টোবর বাংলাদেশ রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নুর মোহাম্মদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন, বর্তমানে জরুরিভিত্তিতে সেতুর আংশিক মেরামত করা হলেও পরবর্তীতে বিদেশি বিশেষজ্ঞের পরামর্শের আলোকে সেতুর স্থায়ী সংস্কারের পরিকল্পনা চলছে। বৃটিশ প্রযুক্তিতে নির্মিত ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুর স্থায়ীত্বের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ যাওয়ায় সঙ্গত কারণেই এটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ বলেও তিনি জানান। রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহত্তম এই সেতুর সংস্কার নিয়ে আর কোনো পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন হতে দেখা যায়নি। ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুর ব্যাপারে বর্তমান সার্বিক কর্তৃপক্ষীয় সিদ্ধান্ত, পরিকল্পনা জানা যায়নি। ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও রেল জংশনে জনৈক যাত্রী জানান, সিলেট-ঢাকা রেললাইন স্থাপনে ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বর্তমান সরকার হাতে নিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। নিঃসন্দেহে এটি আনন্দের খবর। কিন্তু ওই খবরের দিকে চেয়ে থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের উদাসীনতা মোটেই কাম্য নয়। দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলেও তিনি জানান।