আজ আদিত্যপুর গণহত্যা দিবস
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০১৯, ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ
রজত দাস ভুলন:
বালাগঞ্জ আজ আদিত্যপুর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে ১৪ জুন সিলেটের বালাগঞ্জের আদিত্যপুরে পাকবাহিনী বর্বর গণহত্যা চালায়।স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ১৪ই জুন ৪টি সাঁজোয়া যান নিয়ে ২৫-৩০জন পাকিস্তানী সেনা এসে হাজির হয় আদিত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। মুহুর্তে খবর ছড়িয়ে পড়লে আতংকিত হয়ে ওঠে আদিত্যপুর গ্রামবাসি।
পাকিস্তানী বাহিনীর দোসর আব্দুল আহাদ চৌধুরী (ছাদ মিয়া), মসরু মিয়াসহ কয়েকজন গ্রামে এসে জানায় সবাইকে নিয়ে স্কুল মাঠে বৈঠক হবে। দেওয়া হবে শান্তি কমিটির কার্ড। কার্ড নিতে আসা গ্রামের পুরুষরা বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হলে পাক সেনারা রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে ৬৫ জনকে। আর অন্যদিকে রাজাকার আব্দুল আহাদ চৌধুরী আর মসরু মিয়ার নেতৃত্বে গ্রামের প্রতিটা বাড়ীতে চলে লুন্ঠন। পাক সেনাদের গুলিতে মুহূর্তেই নিস্তেজ হয়ে যায় ৬৩টি তাজা প্রান। পাক সেনারা সেই দিন মৃত ভেবে ফেলে যাওয় গুলি লেগে আহত শিবপ্রসাদ সেন কংকন নামের একজন প্রানে বেঁচে যান । দেশীয় আলবদর , রাজকার আল সামসরা এ গনহত্যায় সহযোগীতা করে এদেশের নিরীহ লোকদের উপর হত্যযঞ্জ চালায় । লাশের পঁচা গন্ধে ভারী হয়ে উঠে পুরো এলাকা। হত্যাযজ্ঞ আড়াল করতে ১৭ই জুন বৃহস্পতিবার রাজাকাররা আবার আদিত্যপুরে এসে গর্ত খুড়ে বিদ্যালয় মাঠে লাশগুলো মাটি চাঁপা দেয়। ২২শে জুন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর নির্দেশে মাটি খুঁড়ে বের করা হয় লাশ। সিলেট সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশগুলো বর্তমান গণকবরে (প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অদূরে) সমাহিত করা হয়।
প্রথমে গণকবরের চারপাশে দেয়াল নির্মান করা হয়। সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীর উদ্যোগে জেলা পরিষদের মাধ্যমে এখানে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ। এছাড়া গনকবরে যাওয়ার রাস্তা সহ একটি কালভাট ও নির্মান করা হয় । বালাগঞ্জ মুক্তিযোদ্বা কমান্ডার মোঃ কামাল মিয়া কনা বর্তমান সময়ে মুক্তিযোদ্বাদের স্মৃতি রক্ষায় যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা প্রশংসার দাবীদার । সুরিকোনায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের দাবী জানান ।