সমকামিতায় রাজি না হওয়ায় শেরপুরে কিশোর হত্যা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০১৯, ৭:৪০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সমকামিতায় রাজি না হওয়ায় শেরপুরে ২০১৫ সালে লন্ডনীর নির্দেশে খুন করা হয় কিশোর কামরানকে। দীর্ঘ ৪ বছর পর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে মৌলভীবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
জানা যায়, খুন হওয়ার ২৫ দিন আগে চার বছর পূর্বে নবীগঞ্জ উপজেলার মোঃ মুনির উদ্দিনের ছোট ছেলে মোঃ কামরান হোসেন (১৩) অভিমান করে বাড়ী থেকে পালিয়ে শেরপুর চলে আসে। তখন কামরান রাতে শেরপুর ব্রীজের নিচে থাকত এবং দিনে গাড়ি থেকে ফল নামিয়ে ২০/৩০ টাকা পেত। এটা দিয়েই সে কোনোরকম খাওয়া দাওয়া করে থাকত। তখন জনৈক এক লন্ডনী মাঝে মধ্যে শেরপুর গোলচত্তরে আক্কাস নামের এক ভিডিও দোকানে রুম ভাড়া নিয়ে কামরানের সাথে বলৎকার করত। একদিন কামরান বলৎকারে রাজি না হওয়ায় লন্ডনী কামরানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে ইউনুছ নামের এক লোকের সাথে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে কামরানকে হত্যার চুক্তি করে সেই লন্ডনী। ৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ইউনুছের সহযোগী হত্যাকারী সাদ্দাম, বাদশা, কামাল, আলী, রাহিন ও মহসিন গভীর রাতে কামরানের গলায় রশি প্যাচাইয়া শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কামরানের লাশ শেরপুর গাংপাড় রোডস্থ মঞ্জিল ওয়ার্কশপের সামনে একটি পিকআপ গাড়ির সিটের উপর রেখে যায়।
এঘটনার খবর পেয়ে কামরানের বাবা ঘটনাস্থলে এসে লাশ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করে। এ হত্যাকান্ডে কামরানের বাবা মোঃ মুনির উদ্দিন বাদী হয়ে ওই দিন মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (০৬)। মামলায় কোনো আসামীর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
পরবর্তীতে মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই মোঃ ফরিদ উদ্দিন ও এসআই মোঃ আবু সাঈদ মামলাটি তদন্ত করেন। পরে ডিবির এসআই নজরুল ইসলমা মামলাটি তদন্ত করলেও কোনো রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলার তদন্তবার সিআইডিকে দেয়া হয়। সিআইডি ১ বছর তদন্ত করেও কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। পরে আদালত ২০১৭ সালের ৫ মার্চ পিবিআইকে মামলার তদন্তভার দেন। আদালতের নির্দেশে গুপ্তচর নিয়োগ করে পিবিআই। দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি মাসের ২০ মে নিয়োগকৃত সোর্স মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানায় কামরানের হত্যাকারীরা শেরপুর এলাকায় ঘুরাফেরা করছে। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলমা এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম মহসিনের বাড়ি গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে পুলিশ পর্যাক্রমে অভিযান চালিয়ে সাদ্দম, বাদশা ও কামালকে গ্রেফতার করে। তার ৪ জনই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
এঘটনায় পুলিশ সেই হত্যার পরিকল্পনাকারী লন্ডনীকে খোঁজছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন মৌলভীবাজার কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, খুব শীঘ্রই লন্ডনীর পরিচয় শনাক্ত করা হবে।