ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সিলেটে যতো প্রস্ততি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ মে ২০১৯, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ঘুর্ণিঝড় ‘ফনী’ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সিলেট জেলা প্রশাসন। উপজেলাগুলোতে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। প্রতিটি উপজেলায় হাওরাঞ্চল সংলগ্ন মানুষকে নিরাপদ থাকতে উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সন্দ্বীপ সিংহ। সেই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তত্বাবধানে প্রতিটি উপজেলায়ও মনিটরিং সেল করা হয়েছে। প্রয়োজনবোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে কাজে লাগাতে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক সন্দ্বিপ সিংহ জানান, দুযোর্গ মোকাবেলায় সিলেটের জেলা ও সব উপজেলায় ত্রাণ ও দুর্যোগ পূণর্বাসন কমিটি কাজ করবে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত সকল নির্দেশনা কার্যকর করতে ভিডিও করফারেন্সে নির্দেশনা দিয়েছেন। ঘুর্ণিঝড় ফনী’র দুযোর্গ মোকাবেলায় সরকারের সব ক’টি সেক্টর হাতে হাত ধরে কাজ করবে। এ জন্য সারা দেশের ন্যায় সিলেটের মাঠ পর্যায়ের সরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি দমকল বাহিনীর সব কটি ইউনিটকে সর্বদা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, দুযোর্গ মোকাবেলায় প্রতিটি উপজেলার মেডিকেল অফিসারদের তত্বাবধানে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, মূলত; যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় চিকিৎসক টিম নতুন করে করা হয়নি। এটা রুটিন ওয়ার্ক হিসেবেই গণ্য করা হয়। তাই মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। তবে কতটি টিম মাঠে কাজ করবে, এ তথ্য দেননি তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিনভর সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় সাধারণ মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নদী ও হাওর পাড়ের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকালেই ‘ফণী’র অগ্রভাগ চলে আসবে খুলনায়। অর্থাৎ ঝড়ো হাওয়া, দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হবে। আর আঘাত হানবে বিকেল নাগাদ। ফণী বর্তমানে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটির গতিপথ ও বৈশিষ্ট্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনার ওপর একই রকম গতিতে আঘাত হানবে ‘ফণী’। ঘূর্ণিঝড়টি লাটিমের মতো একটি ব্যাপ্তি নিয়ে ঘুরে ঘুরে এগোচ্ছে। যেটা বডিলি মুভমেন্ট বলা হয়। এভাবে সে উপকূলের দিকে ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনায় আঘাত হানলে সুন্দরবন কিছুটা ঢালের কাজ করবে। কিন্তু ‘ফণী’র তীব্রতা এতোই বেশি যে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলেই শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়াবিদ সুমন সাহা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনায় ‘ফণী’ তার ৭৪ কিলোমিটার ব্যাপ্তি নিয়ে আঘাত হানবে ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে। এই গতি হ্যারিকেনের তীব্রতার। এই বেগে আঘাত হানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশিই হবে।