ওসমানীনগরে গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল : হত্যা না আত্মহত্যা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওসমানীনগরে দুই সন্তানের জননীর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এটিকে আত্মহত্যা বলা হলেও নিহতের স্বজনরা দাবি করেছেন এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হতভাগ্য গৃহবধূ শেফা বেগম (৩০) উপজেলার চিন্তামণি গ্রামের জিলা মিয়ার স্ত্রী। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ-স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করে পিত্রালয়ে না জানিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়াই তড়িগড়ি করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেছে। রোববার উপজেলার চিন্তামইন গ্রামের নিহতের স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃববধূর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহত শিফা বিশ্বনাথ উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের হতদরিদ্র ইসব মিয়ার মেয়ে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জিলা মিয়ার সাথে ১২ বছর আগে শেফা বেগমের বিয়ে হয়। জিলা ও শেফা দম্পত্তির ঘরে মাহি বেগম (৯) ও রাফি মিয়া (৭) নামের দুটি সন্তান রয়েছে।
নিহত শেফা বেগমের ভাই খলিল মিয়া বলেন, আমার বোনকে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। মৃত্যুর খবরটিও আমাদের জানানো হয়নি।লোক মারফত জানতে পেরে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি শেফার লাশ বাড়ির উঠানে রাখা দেখতে পাই। এ সময় থানা পুলিশ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকে জানাই আমার বোনকে স্বামীর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে। এসময় আমার বোনের স্বামীসহ স্বামীর বাড়ির লোকজন আমাদেরকে মারধর করার চেষ্টা করে। আমার বোনের স্বামী ও তার চাচার মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ সংক্রান্ত একটি মামলায় আমার বোনকে বাদি করা হয়। ওই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল। মাস দেড়েক পূর্বে এ বিষয়টি সে আমাকে জানিয়েছিল। এছাড়া বিগত প্রায় ১৫দিন পূর্বে ও বোনের ওই চাচা শ্বশুর সরাসরি আমার মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে বলেন, (পুতরা) তোমারা রেডি থাক কিছু দিনের মধ্যে তোমার বোন শিপার লাশ নিয়ে যেতে হবে বলে ফোন কেটে দেন। এসব হুমকি পাওয়ার পরও আমরা বোনের সংসারের কথা চিন্তা করে সবকিছু সহ্য করেছি। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত আমার বোনকে হত্যা করে দ্রুত লাশ দাফনের উদ্যোগ নেয়।
নিহত শেফা বেগমের বোন রিনা বেগম বলেন, আমার বোনের মৃত্যুর খবর শুনে আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আমরা সেখানে ছুটে যাই। তার লাশ মাটিতে রাখা ছিলো এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশকে বিষয়টি জানাই। কিন্তু পুলিশ আমাদের কোনো কথাই আমলে নেয়নি।
ওসমানীনগর থানার ওসি এস এম আল মামুন বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরেই শেফা বেগম আত্মহত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই বাদি হয়ে থানার অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।