শাহজালাল ও শাহপরাণের মাজারে মুসল্লিদের ঢল
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। ইবাদত-বান্দেগীর মধ্য দিয়ে ইসলাম ধর্মের পবিত্র এই রাতটি পালন করছেন মুসলমান ধর্মাবলম্বীরা।
প্রতিবছরের মতো এবারও শবে বরাতে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নেমেছে সিলেটে অবস্থিত দুই ওলির মাজারে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে নগরের দরগাহ গেইট এলাকায় হযরত শাহজালাল (রহ.) ও খাদিমনগরের হযরত শাহপরান (রহ.) এর মাজারে ভিড় করেছেন মুসল্লীরা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এই দুই মাজারে ভিড়।
রবিবার রাত ১২টার দিকে শাহজালাল মাজারে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাজার প্রাঙ্গনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবু দল বেঁধে মাজারে প্রবেশ করছেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। কেউ কেউ মাজার মসজিদে ইবাদত করছেন, কেউবা মাজার জিয়ারত ও পাশ্ববর্তী কবরস্থান জিয়ারত করছেন। মাজার এলাকায় ঘুরাঘুরিও করছেন অনেকে। মাজার প্রাঙ্গণে ছাপিয়ে দরগাহ গেইটের পুরো সড়কজুড়েই ভিড় লেগেছে মুসল্লিদের। মাজার প্রাঙ্গণে মোমবাতি, আগরবাতি হালুয়াসহ নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
একই অবস্থা খাদিমের শাহপরান মাজারেও। সেখানেও উপচেপড়া ভিড়। সিলেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ জড়ো হয়েছেন এই দুই মাজারে। এক মাজার থেকে আরেক মাজারে যাচ্ছেন অনেকে। সিলেটের বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন মাজার জিয়ারতে।
মুসল্লিরা পবিত্র কোরআন শরিফ তেলওয়াত, জিকির-আসকার আর নফল নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণের মহিমান্বিত রাত পবিত্র শবে বরাত অতিবাহিত করছেন তারা।
শবে বরাতের রাতকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল ও হযরত শাহপরান (রহ.) এর মাজারসহ নগরের প্রায় অর্ধশতাধিক মাজারে ভিক্ষুকদের উপস্থিতি বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। বিভিন্ন জেলা থেকে ভিক্ষুকরা অধিক ভিক্ষা পাওয়ার আশায় এখানে এসে ভিড় জমান। বিভিন্ন মসজিদ ও মাজারের পাশে তাদের ভিক্ষার ঝুলি বিছিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। মাজারগুলোতে আসা লোকজনও নিজের সামর্থ অনুযায়ী অর্থকরী দান করেন।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওলিকুল শিরোমনি হযরত শাহজালাল (রহ.), তার ভাগ্নে হযরত শাহপরান (রহ.) ও সিলেটের প্রথম মুসলমান হযরত বোরহান উদ্দিন (রহ.) সহ অন্যান্য ওলি-আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করতে মাজার ভক্ত লোকজন এই মহিমান্বিত রাত উপলক্ষে সিলেটে এসেছেন।
ফলে মাজার এলাকাগুলোতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সদস্য ও ট্রাফিক পুলিশ মানুষের চলাচলকে নির্বিঘ্ন করতে হিমশিম খাচ্ছে। মাজারে আসা লোকজনের যানবাহনে ওই এলাকাগুলোতে যানজট লেগে গেছে।
এছাড়া শবে বরাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া তথা প্রার্থনার জন্য মুসলিম ধর্মাবলম্বিরা সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন মসজিদে ভিড় করেছেন থাকেন। অনেকে আবার মাজার ও কবরস্থানে যান মোনাজাত করার জন্য। আত্মীয়-স্বজনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তার মুক্তির জন্য কবর জিয়ারত করে দোয়া করেন স্বজনরা।