সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০১৭, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের আউশকান্দি থেকে ওসমানীনগর উপজেলা-সিলেট হুমায়ুন রশিদ চত্বর পর্যন্ত ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খানা খন্দকের কারণে রীতিমতো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ অঞ্চলের মহাসড়কের দু’পাশ ঘেষে ভাসমান দোকানের দখল এবং দ্রুত গতিতে চালকরা গাড়ি চালানোর কারণেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে পথযাত্রীদের। জানা যায়, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি থেকে পানি উমদা বাজার এবং শেরপুর থেকে সিলেট হুমায়ুন রশিদ চত্বর পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এক বছর আট মাসে ৪৩ টি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ গেছে অর্ধশতাধিক যাত্রীসহ পথচারীদের। প্রতিদিন আতংক নিয়ে যান চলাচল করছেন এ অঞ্চলের যাত্রীরা। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে খানা-খন্দক আর নিষিদ্ধ অটোরিকশা চলাচল, ভাঙা বা গর্ত অংশ ছেড়ে গাড়ি ভালো অংশ দিয়ে চলতে গিয়ে অভারটেকিং করে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন না মেনে প্রতিযোগিতা মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালানো ইত্যাদি কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিনই ঝরছে তাজা প্রাণ। অনেকেই হচ্ছে পঙ্গু যার অধিকাংশই হচ্ছেন পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি। সড়ক দূর্ঘটনা বর্তমানে বাড়তে বাড়তে এটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হচ্ছে, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সঈদপুর বাজার, দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট নতুনবাজার, ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর, কাগজপুর ব্রিজ, বুরুঙ্গা সড়কের মুখ, উনিশ মাইল, প্রথমপাশা, গোয়ালাবাজার, ইলাশপুর, তাজপুর, ব্রাহ্মণশাসন মোড়, দয়ামীর, নাজিরবাজার, কুরুয়া ও রশিদপুরসহ রয়েছে শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এসব এলাকায় গত ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের আউশকান্দি, ওসমানীনগর ও সিলেট সদর পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটারে ৪২টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অর্ধশতাধিক মানুষের। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, খানা-খন্দের কারণেই দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক গত ১০ই জুন থেকে এলজিইডি কর্তৃক স্থানীয় ঠিকাদার দিয়ে শুরু হয় সংস্কার কাজ। কিন্তু সংস্কার করা হলেও কিছুদিন পর সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের অবস্থা হয়ে যায় আগের মতোই। এতে করে স্থানীয় লোকজন এবং যাত্রীসাধারণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে, গত জুন মাসের শেষের ১০ দিনে নবীগঞ্জের সৈয়দ পুর থেকে দেবপাড়া পর্যন্ত তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় নববধূ মা- ছেলেসহ নিহত হয়েছেন ৭ জন আহত হয়েছেন ১৫ জন । গত ৬ই জুন মহাসড়কের দয়ামীরে দু’টি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন চালক চান মিয়া। ৭ই জুন গোয়ালাবাজারের দত্তগ্রাম নামক স্থানে ঢাকা থেকে সিলেটগামী শ্যামলী পরিবহন অভারটেকিং করতে গিয়ে চাপা দেয় অটোরিকশাকে। ঘটনা স্থলেই মারা যান ২ জন এবং পরে মারা যান আরো ৩ জন। ৮ জুন বৃহস্পতিবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গজিয়া নামক স্থানে হবিগঞ্জ গামী হবিগঞ্জ বিরতিহীন বাস চাপা দিলে এক শিশু মারা যায়।